Togel Online

Situs Bandar

Situs Togel Terpercaya

Togel Online Hadiah 4D 10 Juta

Bandar Togel

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দেশের অগ্রগতির জন্য ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করতে হবে


হীরেন পণ্ডিত
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় চীনের চেয়েও এগিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দাবি পেন্টাগনের সাবেক সফটওয়্যার প্রধানের। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এর অগ্রযাত্রায় চীনের কাছে যুক্তরাষ্ট্র হেরে গেছে দাবি করে পেন্টাগনের সাবেক সফটওয়্যার প্রধান নিকোলাস চ্যাইলান জানিয়েছেন, প্রযুক্তির অগ্রগতি দিয়ে অল্পদিনের মধ্যেই বিশ্বকে শাসন করতে যাচ্ছে চীন। বর্তমানে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। আগামী এক দশকে নতুন নতুন যেসব প্রযুক্তি আসবে; বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কৃত্রিম জীববিজ্ঞান এবং জিনতত্ত¡ বিষয়ক প্রযুক্তিগুলোতে নেতৃত্ব দেবে চীন। পশ্চিমা দেশগুলো গোয়েন্দা পর্যালোচনা তেমনই ধারণা দিচ্ছে। পেন্টাগনের প্রথম প্রধান সফটওয়্যার কর্মকর্তা নিকোলাস ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ধীরগতির প্রতিবাদে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন নিকোলাস। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আগামী ১৫-২০ বছরে প্রযুক্তির দৌড়ে চীনের সঙ্গে পেরে উঠবে না যুক্তরাষ্ট্র। চীন ইতোমধ্যেই এগিয়ে গিয়েছে। এটা এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য। চীনা কোম্পানিগুলো তাদের সরকারের সঙ্গে একযোগে প্রযুক্তির উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে নিকোলাস চ্যাইলান বলেন, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তারা যৌথভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় দক্ষতা অর্জনের বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে। অথচ সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র খুবই উদাসীন থেকেছে। তিনি মনে করেন, সাইবার নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এখনো কিন্ডারগোর্টেন পর্যায়ে থেকে গেছে
বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রচলন ও ব্যবহারের প্রচেষ্টা চলছে। কৃষির ক্ষেত্রেও নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। সিলিকন ভ্যালি এবং এর সঙ্গে যুক্ত প্রযুক্তি মার্কিন উদ্ভাবনা ও উদ্যোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্টিভ জবস এবং মার্ক জুকারবার্গের মতো বিশাল ব্যক্তিত্ব পৃথিবীব্যাপী ভোক্তাদের জন্য এমন কিছু পণ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছেন যেগুলো তারা পছন্দ করে এবং এগুলো ব্যবহার করে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ সহজতর করা যায়। যেসব চিপস উৎপাদন করেছে সেগুলোর সাহায্যে আমাদের ব্যবহৃত পণ্যগুলো দ্রæততর চিন্তা করতে পারে এবং দ্রæতরভাবে হিসাব-নিকাশও করতে পারে। পৃথিবীর সেরা মস্তিষ্ক দিয়ে এত দ্রæত এসব করা সম্ভব হতো না।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এখন শুধু মানুষকে দাবা খেলার মতো সাধারণ খেলায় পরাস্ত করতে পারে না, উপরন্তু আরও জটিল বিষয়েও পরাস্ত করতে পারে। সারা বিশ্বে যত পরমাণু আছে তার চেয়েও সম্ভাব্য চালের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে। বিল গেটস সম্ভবত মার্কিন চেনতার সবচেয়ে ভালো দৃষ্টান্ত। তিনি ১৩৫ বিলিয়ন ডলার জমিয়েছেন। এ অর্থ থেকে তিনি বড় ধরনের দান কর্মের সূচনা করেছেন। তিনি বিশ্বব্যাপী রোগবালাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন। এসব সৎ কর্মের পাশাপাশি প্রযুক্তির অগ্রযাত্রাজনিত অন্ধকার দিকও রয়েছে। বর্তমান জমানায় প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার ফলে বহু মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়ার মতো উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া এসব নতুন শিল্প বিপুলসংখ্যক অপকর্মের জন্ম দেয়ার বিপদও সৃষ্টি করেছে। যেমন বাজার ক্ষমতার কেন্দ্রিকরণ, মানুষের ব্যক্তিগত জগতে আগ্রাসন চালানো এবং রাজনৈতিক কর্মকাÐকে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার। বর্তমানে আমরা এমন সব মেশিন তৈরি করতে সক্ষম যেগুলো দৈনন্দিন কাজের জন্য মানুষের চেয়েও দক্ষ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের জন্য বিশাল আকারের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমরা এখন এমনসব মেশিন তৈরি করছি যেগুলো শুধু প্রোগ্রামের সাহায্যে কাজ করে না, বরং মানুষের চেয়েও সহজে শিখতে পারে, বিশেষ করে নির্ধারিত কিছু ক্ষেত্রে। এভাবে মেশিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে মানুষকে অতিক্রম করে যাচ্ছে। উন্নততর শিক্ষা এবং শ্রমিকদের জন্য কর্মপ্রশিক্ষণ সাময়িকভাবে বেদনার উপশম ঘটাতে পারে, কিন্তু এখনকার কম্পিউটারগুলো রেডিওলজিস্টদের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছে, এমনকি উচ্চ ডিগ্রির ডাক্তারদের চেয়েও কম্পিউটার অনেক নিরাপদ চিকিৎসা দিতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে স্বয়ংচালিত মোটরগাড়ি ও ট্রাক পরিবহন শ্রমিকদের কাজছাড়া করে দেবে। এ ধারণা যদি সত্য হয় তাহলে খুবই দুশ্চিন্তার কথা। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে সড়ক পরিবহন খাত বিশাল কর্মসংস্থানের উৎস। এ খাতে যারা নিয়োজিত থাকে তারা হয় হাইস্কুল পাস অথবা হাইস্কুল ড্রপ আউট। অর্থাৎ এরা কম শিক্ষিত শ্রমিক। দুশ্চিন্তার বিষয় হল শ্রম পরিহারকারী মেশিন ব্যবহারের ফলে মজুরি কমে যাবে, বিশেষ করে যারা কম দক্ষ শ্রমিক তাদের বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। এ সমস্যার সমাধানের জবাব হল শ্রমজীবীদের দক্ষতা বৃদ্ধি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্র আছে যেখানে এটা যথেষ্ট নয়। এখানে সমস্যাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলোকে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা যদি বাংলাদেশ নিয়ে ভাবি তাহলেও আমাদের গভীর দুশ্চিন্তার কারণ আছে।
বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকরা ভালো বেতন বা মজুরি পায় না কারণ তারা অদক্ষ। সমাধান হিসেবে এসব অদক্ষ শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু যদি কর্মসংস্থান প্রদানকারী দেশগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা রোবট ব্যহার করতে শুরু করে তাহলে আমাদের দেশের গরিব প্রবাসী শ্রমিকদের অবস্থা কী দাঁড়াবে? সুতরাং খুব নিকট ভবিষ্যতে না হলেও ভবিষ্যতে এটা একটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। অনেকে আছেন যারা বলতে চান, দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তারা অতীতের দিকে তাকাতে পরামর্শ দেন। বাজার সবসময় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। বাজারের বিকাশ অর্থনীতির কাঠামোতে পরিবর্তন এনেছে এবং এর ফলে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞানের দুনিয়ায় তরঙ্গায়িত সে ধারণাকে পুঁজি করে গড়ে ওঠা শিল্পের কল্যাণে উন্নত দেশগুলো মুনাফা লুটছে এবং মুনাফা অর্জনের এ খাতকে আরও পরিব্যাপ্ত করায় সদাব্যস্ত রয়েছে। যেমনটি দেখা যায় মাসাওসি সন-এর ক্ষেত্রে। বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ জাপান; আর সন হচ্ছেন সে দেশের শীর্ষ একজন ধনী। টেলিকম কোম্পানি সফট ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও মাসাওসি সন বেশি আলোচিত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্যবসায় তার বিনিয়োগ, জাপানের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ভূমিকা রাখা ও মানবহিতৈষী কর্মকাÐের জন্য। ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসাবে তার ব্যবসায়ের পরিমাণ ২২.৪ বিলিয়ন ডলার। সফট ব্যাংক মূল ব্যবসা হলেও ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা এবং ফরাসি রোবটিক প্রতিষ্ঠান আলদেবারানের সঙ্গে রয়েছে তার ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব।
সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাইড শেয়ার কোম্পানি উবারেরও ১৫ শতাংশ ইকুইটি ক্রয়ে চুক্তি করেছেন। ইতিমধ্যে সনের সফট ব্যাংক ১০০ বিলিয়ন ডলারের ভেঞ্চার তহবিল গঠন করেছে স্টার্টআপ ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য। তার এ প্রয়াস প্রযুক্তি বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সনের গড়ে তোলা এ তহবিলটি ব্যবহৃত হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগের জন্য। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে সন বলেন, ‘আমি মনে করি আজ থেকে ৩০ বছর পরে বিশ্বে স্মার্ট রোবটের সংখ্যা হবে ১০ বিলিয়ন। এই রোবটরা ব্যাপকভাবে মানুষের চাকরি নিয়ে নেবে। যতগুলো শিল্প মানুষ গড়ে তুলেছে, সবগুলোই নতুন করে পুনর্বিন্যস্ত হবে।’
ই-কমার্সের দিকপাল বলে খ্যাত আলিবাবার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে বেশ কিছু ঝুঁকি এবং সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন। জ্যাক মা বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান, প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব এখন বড় রূপান্তরের পথে। এ প্রযুক্তি অনেক সফল ব্যক্তিত্ব তৈরি করবে, আগ্রহ উদ্দীপক ক্যারিয়ারও তৈরি করবে; কিন্তু সত্যিকার অর্থে প্রত্যেক নতুন প্রযুক্তি সামাজিক সমস্যাও তৈরি করে। যদি এর মোকাবেলায় আমরা এক হতে না পারি, তবে মানুষ একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কারণ প্রত্যেক প্রযুক্তিগত বিপ্লব বিশ্বকে ভারসাম্যহীন করে দেয়।’
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং বিগ ডাটাকে তিনি বিশ্ব মুক্তির জন্য হুমকি মনে করার পাশাপাশি একে সমর্থনের কথাও উল্লেখ করেছেন। এ ব্যাপারে তার মূল্যায়ন হচ্ছে- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবট অসংখ্য চাকরি কেড়ে নেবে। কারণ ভবিষ্যতে অনেক কিছুই করা হবে মেশিন দিয়ে। আগামী দিনগুলোয় চিকিৎসাসেবায়, অফিস-আদালতে, শিল্প-কারখানায়, সংবাদসংস্থা বা গণমাধ্যমে, ভাষান্তর প্রক্রিয়ায়, টেলিফোন সেবায়, বৈজ্ঞানিক গবেষণায়, হোটেল-রেস্তোরাঁ এমনকি বিপণিবিতানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন যন্ত্র তথা রোবটের ব্যাপক ব্যবহারের আভাস দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
রায়ান আয়ারস- যিনি ব্যবসায়িক কৌশলের গুরু হিসেবে খ্যাত, এক নিবন্ধে দৈনন্দিন জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব সম্পর্কে ছয়টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন- ১. স্বয়ংক্রিয় পরিবহন ব্যবস্থায় ২. সাইবর্গ টেকনোলজি- যান্ত্রিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যা মস্তিষ্ক দ্বারা চালিত হবে ৩. বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ৪. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা সমাধানে ৫. বন্ধুভাবাপন্ন রোবট ৬. বয়োবৃদ্ধদের উন্নত পরিচর্যায়। জানা যায়, জাপানে ইতিমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন সংবাদ মাধ্যম কোম্পানি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেক বড় বড় কোম্পানি তাদের প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক বিষয়গুলো দেখভালের বিষয়টি বুদ্ধিমান মেশিনের ওপর ছেড়ে দিয়ে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি নীতি গবেষণা কেন্দ্র ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’ জানিয়েছে ২০২২ সালের মধ্যে রোবটের কারণে বিশ্বজুড়ে সাড়ে ৭ কোটি লোক চাকরি হারাবে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটি বলেছে, একই সময়ে নতুন প্রযুক্তির কারণে ১৩ কোটিরও বেশি কাজের সুযোগের সৃষ্টি হবে। ডাটা এনালিস্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপার, সোশ্যাল মিডিয়া স্পেশালিস্ট এ ধরনের কাজ অনেক বাড়বে। এছাড়া শিক্ষক বা কাস্টমার সার্ভিস কর্মীর মতো কাজ, যাতে কিনা অনেক সুস্পষ্ট মানবিক গুণাবলীর দরকার হয়, সেরকম অনেক কাজও তৈরি হবে। বোদ্ধামহল মনে করছেন, বুদ্ধিমান মেশিনের এনে দেয়া প্রাচুর্যের ফলে ওই মানবিক কাজের চাহিদা অনেকাংশে বাড়বে কিন্তু কমবে না।
তথ্যপ্রযুক্তি পরামর্শদাতা বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ম্যাকেন্সি গেøাবাল ইনস্টিটিউট বলছে এ খাতের দারুণ সম্ভাবনার কথা। শুধু বাজারজাতকরণ, বিপণন, ও সাপ্লাই চেইনের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে আগামী দুই দশকে মুনাফা, দক্ষতাসহ অর্থনৈতিক মূল্য ২৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে যেতে পারে। মানুষের জন্য আগুন বা বিদ্যুতের চেয়েও বেশি প্রভাব রাখতে সক্ষম হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ।
ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্রে অসততা ধরা যায় বলে মনে করে। অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের ঋণের আবেদন গ্রহণ করে সম্ভাব্য ঋণগ্রহীতাদের তাঁদের আয়সহ ঋণের কিস্তি পরিশোধের পরিকল্পনা বিষয়ে ভিডিওর মাধ্যমে তথ্য দিতে হয়। অ্যাপটি ব্যবহারকারীর ৫০ ধরনের মুখভঙ্গি পর্যবেক্ষণ করে তাদের সত্য-মিথ্যার ধরন নির্ণয় করে। যন্ত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থাকায় গ্রাহক চিনতে সুবিধা হয়। যাঁদের নিয়ে সন্দেহ হয়, তাদের আরও বেশি যাচাই-বাছাই করা হয়। অর্থাৎ বুদ্ধিমান অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহক বাছাইয়ের প্রাথমিক কাজ করা যাচ্ছে। শুধু ঋণ গ্রহণ বা আর্থিক খাতেই এর ব্যবহার সীমাবদ্ধ? না, তা নয়। কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কর্মীর আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হচ্ছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সংবাদপত্রেও এখন দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ সাংবাদিকের কাজও করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমান সফটওয়্যার। অর্থনীতিবিষয়ক ও ক্রীড়া বিষয়ক প্রতিবেদন তৈরিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক তথ্য বিশ্লেষণ করে তাদের সফটওয়্যার। এ ছাড়া মোবাইল সেবাদাতা ফোনের নেটওয়ার্ক সমস্যার পূর্বাভাস দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। সাইবার নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ঝুঁকি নির্ণয়ের এর ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।
এখন পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে বেশি সুবিধা নিতে পেরেছে প্রযুক্তি খাত। এখনকার শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পশ্চিমাদের গুগল ও আমাজন আর চীনের আলীবাবা ও বাইদুর কথা বলাই যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে সফল হয়েছে তারা। যেমন আমাজনের ক্ষেত্রে রোবটকে নির্দেশ দেওয়া, ভুয়া পণ্য শনাক্ত করায় যুক্ত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আলীবাবাতেও আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার দেখা যায়।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, কর্মক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এর প্রয়োগে ব্যবস্থাপকেরা প্রতিষ্ঠানের কর্মীর ওপরে অকল্পনীয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। উদাহরণ চোখের সামনেই। কর্মীদের হাতে পরার উপযোগী একটি ব্যান্ডের পেটেন্ট করিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান আমাজন। ব্যান্ডটি ওয়্যারহাউসের কর্মীদের হাতের নড়াচড়া শনাক্ত করতে সক্ষম। কর্মীরা যখন বসে থাকবে, তখন এটি ভাইব্রেশন দেওয়া শুরু করবে।
‘ওয়ার্কডে’ নামের আরেকটি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কথা বলা যাক। প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মীর কী মনোভাব তা জানা দরকার? কে কখন চাকরি ছাড়বে, সেটি ধারণা করা লাগবে? নানা তথ্য বিশ্লেষণ করে সফটওয়্যারটি সে সুবিধা দেয়। ৬০টি বিষয় বিবেচনা করে কৃত্রিম বুদ্ধির প্রয়োগে পূর্বাভাস দিতে পারে ওয়ার্কডে সফটওয়্যার।
অবশ্য কর্মক্ষেত্রে নজরদারির বিষয়টি একেবারে নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই কর্মীদের ওপর নজরদারি করে আসছে অনেক প্রতিষ্ঠান। কর্মীরা কখন কী করেন, কখন অফিসে আসেন বা কখন বাইরে যান, বিভিন্ন উপায়ে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতনেরা তা জানার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া কর্মীরা কম্পিউটারের বসে কী কাজ করেন, সেটাও তাঁদের অজানা নয়। তাঁদের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তো সোনায় সোহাগা! তাঁদের কাছে কর্মীদের সবকিছু নজরদারি করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগ উপযুক্ত বলে মনে হবে। কারণ, সব তথ্যই তো মূল্যবান! তা ছাড়া কর্মক্ষেত্রে কীভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, তার বিষয়ে আইনকানুন কম। অনেক কর্মীই কাজের চুক্তির আগে অসতর্কভাবেই নজরদারির বিষয়ে সম্মতি দিয়ে দেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধু এ রকম উৎপাদনশীল সফটওয়্যারেই সীমাবদ্ধ নেই। কর্মক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত স্ক্রিন ব্যবহার করে ভুয়া খরচের দাবি, ভুয়া রশিদ তৈরি, ভুয়া অতিরিক্ত কাজের পারিশ্রমিক দাবির বিষয়গুলো ধরা যায়।
এতে কি শুধু প্রতিষ্ঠানের লাভ? না, কর্মীদেরও কিছুটা লাভ আছে। কর্মীরা নিয়ম মানছেন কি না, তাঁরা সুস্থ আছেন কি না, তা জানার সুযোগ আছে। কম্পিউটার ভিশন প্রযুক্তিতে কর্মীরা নিরাপদ পোশাক পরেছেন কি না, সেগুলোও পরীক্ষা করা যায়। এতে কর্মীরা নিরাপদ থাকেন। ফলে কাজের জন্য ন্যায্য মূল্যায়ন পাওয়ার আশা থাকে
কারও বেতন-ভাতা বাড়াতে হবে? কৃত্রিম বুদ্ধিমান যন্ত্রের সাহায্যে তাঁর পদোন্নতি ও বেতন বাড়ানোর বিষয়টি ঠিক করা যায়। পুরো পদ্ধতিটি তাঁকে নিয়োগ দেওয়ার সময় থেকেই শুরু হতে পারে। মানুষের ক্ষেত্রে পক্ষপাত থাকতে পারে কিন্তু অ্যালগরিদম যদি নিখুঁতভাবে তৈরি করা যায়, তা কখনো পক্ষপাত করে না।
মানুষ যে ভুলগুলো করে সফটওয়্যারে তা সম্ভব নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে চাকরির বর্ণনাকে এমনভাবে উন্নত করা যায় যাতে নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষকে আকৃষ্ট করানো যায়। এ ছাড়া অ্যালগরিদম ব্যবহার করে বৈষম্য ধরা সহজ হয়।
একজন কর্মী বিরতি হিসেবে কতটুকু সময় বাইরে কাটাচ্ছেন, প্রতিষ্ঠানগুলো তা নজরদারি করতে শুরু করেছে। এখন তো ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা জানে, তা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের ফলে মানুষের মনে স্পর্শকাতর অনুভূতি সৃষ্টি হতে পারে। ‘ভেরিয়াটো’ নামের একটি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এমন সফটওয়্যার তৈরি করেছে, যাতে কর্মী কম্পিউটারে কতবার স্পর্শ করেছে, সে তথ্যও জানা যায়। কাজের প্রতি কর্মী নিবেদন বুঝতে এ সফটওয়্যার দিয়ে নজরদারি করে প্রতিষ্ঠানগুলো। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কর্মীর পেশাদার যোগাযোগের বাইরে সামাজিক যোগাযোগের প্রোফাইলের কর্মকাÐগুলোতেও চোখ রাখতে পারে প্রতিষ্ঠান।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় অবশ্যই মেনে চলতে হবে। তথ্য যত সম্ভব অজ্ঞাতনামা হতে হবে। যেমন মাইক্রোসফটের একটি সেবা আছে, যা অফিসের কর্মীদের কাজের সময় ব্যবস্থাপনার তথ্য সংরক্ষণ করে। কিন্তু ব্যবস্থাপকদের কাছে ব্যক্তিগত তথ্যের পরিবর্তে তা সামষ্টিক কাজ হিসেবে তথ্য দেয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ হতে হবে স্বচ্ছ। কর্মীদের কাছে প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে এবং তাঁদের কোন কোন তথ্য সংগ্রহ করা হবে, তা জানিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া নিয়মমাফিকভাবে কর্মী নিয়োগ, বরখাস্ত বা পদোন্নতির বিষয়গুলোতে সফটওয়্যারের অনাকাক্সিক্ষত ফলাফলগুলো বিবেচনা করতে হবে। সর্বশেষ, দেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য পাওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। এসব তথ্য যেন চাকরিদাতাদের সামনে দেখাতে পারে, সে সুযোগ রাখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন এমনকি ভারতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শুরু হলেও বাংলাদেশ প্রযুক্তির এই সর্বশেষ সংস্করণের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে মনে করেন প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নেতিবাচকতা সম্পর্কে সাবধান থেকে দেশের সর্বক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন তারা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শঙ্কা কাটিয়ে সদ্ব্যবহার নিশ্চিতে এবারের বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘সবার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ইতিবাচক ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকতে বাংলাদেশের প্রযুক্তি পরিবেশে সহায়ক অবকাঠামো-কারিগরি প্রস্তুতিতে জোর দেন বক্তারা বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিকাশের জন্য কয়েকটি বিষয়ে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার এবং সিস্টেমস থাকতে হবে। এক সময় আমরা মেশিন লার্নিং ডেভেলপ করতাম সিপিইউ দিয়ে কিন্তু এখন গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট বা জিপিইউ-তে বেশ গুরুত্ব দিতে হবে। উন্নত জিপিইউ নিশ্চিত করা গেলে মেশিন লার্নিংয়ে বেশি সক্ষমতা আসবে।
গুগল, ফেসবুকের আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের দক্ষতার পেছনের কারণ ফেস ডিটেকশনে ভালো ফেসবুক, স্প্যাম ইমেজ ডিটেকশনে ভালো গুগল। এই ডিটেকশন করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে এই ডিটেকশনের জন্য যোগ্য করতে প্রয়োজন হাজার হাজার ছবি, অর্থাৎ হাজার হাজার ডেটা। যেহেতু গুগল এবং ফেসবুকের ব্যবহারকারী বিশ্বজুড়ে তাই তাদের ডেটা সংখ্যা বেশি। সেজন্য তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সক্ষমতাও বেশি।
বাংলাদেশের তরুণরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিষয়ে কৌতুহলী, এই কৌতুহলী তরুণদের মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দেশের অগ্রগতির জন্য ইতিবাচকভাবে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে কৃষিভিত্তিক শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ। কিন্তু কৃষি কাজ এখনো প্রকৃতি নির্ভর, কীটনাশক সনাতন পদ্ধতিতে চলছে। যেখানে ফসলের রোগবালাই, মাটির অবস্থা, আবহাওয়া নির্ণয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি বড় সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে ১৬ কোটি মানুষের জন্য ডাক্তারের সংখ্যা মাত্র ২৫-৩০ হাজার। এখাতে অবশ্যই আমাদের প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। তাছাড়া শিল্পখাতের সিস্টেম লস কমিয়ে আনতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভরযোগ্য উপায় হতে পারে।
প্রায় সবখাতে কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তার ব্যবহার এবং অতিমাত্রায় মেশিন-রোবট নির্ভরতা মানুষের বেকারত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এই বৈশ্বিক উৎকণ্ঠাকে স্বীকার করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ইতিবাচক ব্যবহারের তাগিদ দিয়েছেন মোবাইলফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে মানুষের কায়িক শ্রম কমিয়ে জ্ঞানভিত্তিক শ্রমের উপায় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ভারত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় গুরুত্ব দিচ্ছে। পুরো বিশ্বের ব্যবসায়িক নামকরা প্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে স্বল্প পরিসরে কাজ করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বেকারত্বের ভয়ে বাংলাদেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে পিছিয়ে গেলে পুরো বিশ্ব থেকে পিছিয়ে পড়তে পারে। প্রযুক্তির এই উৎকর্ষে শারীরিক শ্রম দেয়া শ্রমিকের সংখ্যা কমার সম্ভাবনা রয়েছে ঠিক তেমনি জ্ঞানভিত্তিক শ্রমের ক্ষেত্রও প্রসারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিবর্তন হাওয়া সর্বদিকে, এখন পুরো বিশ্বের রূপ পাল্টাতে শুরু করেছে । আমাদের বাংলাদেশ এখন ডিজাটাল কতটুকু নিজেদের বর্তমান প্রযুক্তি সাথে নিজেদের নিয়োজিত করতে পেরেছি এবং তার প্রয়োগ কতটুকু দেশের কল্যাণের জন্য তা বলা খুবই কঠিন । শুধুমাত্র তথ্যভান্ডার ওয়েব সাইট দিয়ে সব কাজ এক সাথে শেষ হয়ে যায়না, তাকে ডিজিটাল বাংলাদেশ এই নামকরণ করা যায় না। তবে বর্তমান সরকারের এই প্রচেষ্টা খুব কম তা বলাও সঠিক নয়। কিন্তু আমাদের বিশ্বে সাথে এ কহয়ে সঠিক উপায়ে চলতে হলে আমাদের আরো বেশী প্রযুক্তি নির্ভরসহ, নিজেদের প্রযুক্তি উন্নয়নে, নিজেদের মেধাকে কাজে লাগানো ছাড়া আর এর কোন বিকল্প নাই।
দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করতে পারলেই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা সঠিকভাবে এগুতে পারব। তাহলেই সম্ভব হবে অতিরিক্ত কর্মক্ষম জনমানবকে কাজে লাগানো আর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলা।
বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে অনেক ভালো করেছে। আগামীর প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতেও প্রস্তুত হচ্ছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উভয়ক্ষেত্রে সমানভাবেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরেও ই-গভর্নেন্স, সার্ভিস ডেলিভারি, পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ইমপ্লিমেনটেশন, তথ্যপ্রযুক্তি, বিকেন্দ্রীকরণ, নগর উন্নয়ন এবং এসডিজি বাস্তবায়ন নীতি ও কৌশল নিয়ে বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ এখন দুটি সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে সংযুক্ত। তৃতীয় সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে কানেক্টিভিটির কাজ চলছে। আকাশে স্যাটেলাইট উড়িয়েছে। অত্যাধুনিক হাইটেক পার্ক নির্মাণের মাধ্যমে আগামীর বিশ্বকে বাংলাদেশ জানান দিচ্ছে- ৪র্থ শিল্পবিপ্লœবের নেতৃত্ব দিতে বাংলাদেশও প্রস্তুত। আমাদের হাইটেক পার্কগুলো হবে আগামীর সিলিকন ভ্যালি। প্রযুক্তিনির্ভর এসব হাইটেক পার্ক প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পায়ন, তরুণদের কর্মসংস্থান এবং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার শিল্পের উত্তরণ ও বিকাশে সুযোগ সৃষ্টি করবে। ইতোমধ্যে ৬৪ জেলায় ৪,৫০১ ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটাল নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সরকারের প্রধান সেবাসমূহ বিশেষ করে ভূমি নামজারি, জন্ম নিবন্ধন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বা চাকরিতে আবেদন ইত্যাদি ডিজিটাল পদ্ধতিতে হচ্ছে।
কালক্ষেপণ না করে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাব্য বিরূপ প্রতিক্রিয়াগুলো মোকাবিলা করার জন্য আমাদের জোরালো প্রস্তুতি নিতে হবে। বিশাল অদক্ষ ও স্বল্প দক্ষ কর্মী বাহিনীর দক্ষতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। না হলে প্রযুক্তির দ্রæতগামী ট্রেনে যারা চড়তে পারবে না, তাদের জন্য অপেক্ষা করবে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।
আমাদের ৪ কোটির বেশি ১৫-৩৫ বছরের যুবক-ই আমাদের বিশাল সম্পদ। তাদের কেন্দ্র করেই আমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫৪ ডলার। ২০৪১ সালে এটি করতে হবে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার। যদি সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি- তাহলে আমরা তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হব।
হীরেন পÐিত, প্রাবন্ধিক ও রিসার্চ ফেলো, বিএনএনআরসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

slot qris

slot bet 100 rupiah

slot spaceman

mahjong ways

spaceman slot

slot olympus slot deposit 10 ribu slot bet 100 rupiah scatter pink slot deposit pulsa slot gacor slot princess slot server thailand super gacor slot server thailand slot depo 10k slot777 online slot bet 100 rupiah deposit 25 bonus 25 slot joker123 situs slot gacor slot deposit qris slot joker123 mahjong scatter hitam

sicbo

roulette

pusathoki slot

orbit4d slot

pusatmenang slot

https://www.firstwokchinesefood.com/

orbit4d

https://www.mycolonialcafe.com/

https://www.chicagotattooremovalexpert.com/

fokuswin

slot bet 200

pusatmenang

pusatplay

https://partnersfoods.com/

https://www.tica2023.com/

https://dronesafeespana.com/

https://mrzrestaurants.com/

slot server luar