Togel Online

Situs Bandar

Situs Togel Terpercaya

Togel Online Hadiah 4D 10 Juta

Bandar Togel

কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হবে

একটি দেশ যখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হয় এবং নারীর শিক্ষা, ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান বাড়ে তখন এ ধরনের পরিস্থিতির তৈরি হয়। এর সাথে নগরায়নের একটি বড় ভূমিকা আছে। তবে এর কিছু ভবিষ্যৎ ঝুঁকিও রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এটি এখন ভালো খবর হিসেবেই দেখা যেতে পারে। আমরা এখন যে অবস্থায় আছি সেটি আদর্শ অবস্থা। এখানে দেখা যাচ্ছে, জন্মহার এবং মৃত্যুহার দু’টোই কমে আসে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ১৫ থেকে ৬৪ বছর পর্যন্ত জনগোষ্ঠী ৬৫ দশমিক ৫১ শতাংশ। এই জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) হিসেবে বর্ণনা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই জনগোষ্ঠী বেশি হবার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল থাকবে বেশি। অর্থাৎ তাদের ব্যবহার করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা সম্ভব।

বাংলাদেশের জন্য বিষয়টি ইতিবাচক এই অর্থে যে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে পারবে। মাত্র ১৮ ডলার দিয়ে যেভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতির যাত্রা শুরু। বাংলাদেশের কৃষিতে পালাবদলের নেপথ্যের দুই তারকা। যদি জন্ম হার বাড়তেই থাকতো তাহলে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানো সম্ভব হতো না। ফলে বেকারত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে বেকারত্ব রয়েছে সেটি কমে আসবে যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া অব্যাহত থাকে।

কিন্তু আগামী সতের থেকে আঠারো বছরের মধ্যে সে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করবে। কারণ তখন ৬৫ বছরের বেশি জনগোষ্ঠী আরো বেড়ে যাবে। ২০৩৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য অনুকূল পরিবেশ থাকবে। এরপর প্রবীণ জনগোষ্ঠী বাড়তে থাকবে। ২০২২ সালের জনশুমারিতে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ও নেতিবাচক দু’টো দিকই রয়েছে। ২০২২ সালের জনশুমারিতে দেখা যাচ্ছে, ৬৫ বছর থেকে শুরু করে তার ঊর্ধ্বে জনসংখ্যা ৫.৮৮ শতাংশ। এটি যদি সাত শতাংশে পৌঁছে যায় তখন সেটিকে বয়স্কদের সমাজ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন্মহার কমলেও ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের জনসংখ্যা হবে ২০ কোটি ৪০ লাখ। ২০৫৭ থেকে ২০৬৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জনসংখ্যা স্থিতিশীল থাকবে। কারণ তখন জন্ম ও মৃত্যুহার সমান হবে। এরপওে মোট জনসংখ্যা আস্তে আস্তে কমতে থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দেশে শিক্ষিত বেকারের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, দেশে নারী-পুরুষ স্বল্পশিক্ষিত ও অশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৭৭ হাজার। দেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের হার যেমন বাড়ছে, তেমন উচ্চশিক্ষিতদেও বেকারত্বের হার বৃদ্ধি যেন নৈমিত্তিক খবর হয়ে উঠছে। উচ্চশিক্ষা এখন আর কাজ পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। তরুণরা যত বেশি পড়ালেখা করছেন, তাদের তত বেশি বেকার থাকার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। করোনা মহামারিতে চলতি বছর বিশ্বে বেকার মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ২০ কোটি ৭০ লাখ। এই সংখ্যা করোনা মহামারি শুরুর আগের বছর ২০১৯ সালের চেয়ে ২ কোটি ১০ লাখ বেশি। সম্প্রতি প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক-ট্রেন্ডস ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশ্বের বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের বর্তমান অবস্থা এবং পূর্বাভাস তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ও ডেলটা ধরন বিশ্বের সব দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে চলতি বছর বিশ্বে বেকার মানুষের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ২০ কোটি ৭০ লাখ হতে পারে। করোনার প্রাদুর্ভাব এবং সময়কাল সম্পর্কে অনিশ্চয়তার কারণে বিশ্বে আগামী বছর পর্যন্ত বেকার মানুষের সংখ্যা ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি থাকবে। আগামী দিনে চাকরি হারানো সব মানুষের চাকরি ফিরে পাওয়া ও মহামারির আগের কর্মক্ষমতায় ফিরে যাওয়া বেশির ভাগ দেশের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা অর্থাৎ স্নাতক বা স্নাতকোত্তর শেষ করতেই একজন শিক্ষার্থীর জীবন থেকে ১৬ থেকে ১৮ বছর অতিবাহিত হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেশনজট মিলিয়ে আরো তিন-চার বছর বেশি লেগে যায়। এরপর পরিবারের হাল ধরতে খুঁজতে হয় চাকরি। সন্তোষজনক চাকরি পাওয়া নিয়ে উচ্চশিক্ষিত তরুণদের মধ্যে হতাশা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কত সে বিষয়ে হালনাগাদ কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। তবে এর সংখ্যা যে একেবারে কম নয়, সেটি দেখা যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে জনবল নিয়োগের সময়। হোক তা সরকারি কিংবা বেসরকারি।

বাংলাদেশের শ্রমশক্তি-সম্পর্কিত জরিপে বেকারত্বের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে এভাবে ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের এমন ব্যক্তিকে বেকার বিবেচনা করা হয়েছে, যে সক্রিয়ভাবে কাজের সন্ধান করা বা কাজের জন্য প্রস্তুত থাকা সত্তে¡ও কোনো কাজ করে না বা পায়নি। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এর সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা যায়, স্বনামধন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশ, অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশই বেকার। ঐ প্রতিষ্ঠানের মাত্র ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি পান এবং মাত্র ৩ শতাংশ স্ব-উদ্যোগে কিছু করছেন। দুই বছর আগেও বিশ্বব্যাংক একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর জরিপ করেছিল। তাতেও দেখা গেছে, স্নাতক পাশ করা শিক্ষার্থীদের ৪৬ শতাংশ বেকার, যারা তিন বছর ধরে চাকরি খুঁজছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি অনুযায়ী, দেশে শিক্ষিত মানুষের মধ্যেই বেকারের হার বেশি, যেখানে ৪৭ শতাংশ শিক্ষিতই বেকার। অন্যদিকে দেশে প্রতি বছর শ্রমশক্তিতে যোগ হচ্ছেন ২০ লাখ মানুষ। কিন্তু সেই অনুপাতে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। ফলে বড় একটি অংশ বেকার থেকে যাচ্ছেন।

করোনার কারণে বহু প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করেছে, অর্থাৎ অনেক মানুষ চাকরি হারিয়েছে। এতে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। আবার চাকরি থাকলেও অনেকের বেতন কমেছে। দু’টো মিলিয়ে দেশের বিপুল মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। কিন্তু সেই সংখ্যার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান আছে কি না, সেটিই এখন প্রশ্ন।
বেসরকারি একাধিক গবেষণা সংস্থার জরিপ-গবেষণার সুবাদে এ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা মিললেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো তথ্য জানা যায়নি। কবে নাগাদ সরকারিভাবে বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের তথ্য মিলবে, তা-ও অজানা। সাধারণত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপের মাধ্যমে বেকারের সংখ্যা উঠে আসে। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে দেশে এই জরিপ হয়নি। সর্বশেষ ২০১৬ সালে শ্রমশক্তি জরিপ হয়েছিল। সেটির ফল প্রকাশ করা হয় এক বছর পর, ২০১৭ সালে। অথচ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশে প্রতি দুই বছর পরপর বিবিএসের এই জরিপ করার কথা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের অনেক দেশই প্রতি মাসে বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত জনগোষ্ঠীর পরিসংখ্যান প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে এই তথ্য জানা যাচ্ছে না।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ছিল ৬ কোটি ৩৫ লাখ। তাদের মধ্যে কাজ করেন ৬ কোটি ৮ লাখ নারী-পরুষ। বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ। কিন্তু করোনার কারণে দেশে যে বেকারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সেই সংখ্যা কত, এমন হিসাব নেই। পাঁচ বছর আগের শ্রমশক্তি জরিপে দেখা গেছে, দেশে স্নাতক পাশ বেকারের হার ৩৯ শতাংশ।

লন্ডনের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) তথ্যমতে, বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার সবচেয়ে বেশি। প্রতি ১০০ জন স্নাতক ডিগ্রিধারীর মধ্যে ৪৭ জনই বেকার। অর্থাৎ প্রতি দুই জনে একজনের নাম বেকারের খাতায় অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বব্যাংক গোষ্ঠীভুক্ত প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) এক সমীক্ষায় এসেছে, কোভিড-১৯ এর কারণে দেশের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্রও মাঝারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত ৩৭ শতাংশ মানুষ বেকার হয়েছেন। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ২০ শতাংশ আসে এই অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান থেকে। আইএলও বলছে, করোনা মহামারির কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে তরুণ প্রজন্ম। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সিদের মধ্যে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশই বেকার হয়েছেন। করোনার কারণে তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ হয়েছে। আইএলওর হিসাবে, বাংলাদেশে করোনায় ১৬ লাখ ৭৫ হাজার তরুণ-তরুণী কাজ হারিয়েছে।

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই তরুণ। এ দেশের কর্মসংস্থানেও তারুণ্যের ভূমিকা রয়েছে অসামান্য। আজকের তরুণরাই আগামী দিনে দেশ পরিচালনা এবং বড় বড় কাজের নেতৃত্ব দেবে। এখন থেকে যদি তরুণদের দক্ষ করে গড়ে তোলা যায়, তবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আরো সুন্দর হবে। তাই দেশ গঠনে তরুণদের চাওয়াকে যেমন গুরুত্ব দিতে হবে, ঠিক তেমনি তাদের পর্যাপ্ত সুযোগও দিতে হবে।

বিআইডিএসের এক জরিপে উঠে এসেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ বেকার। ‘মূলত তিনটি কারণে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। প্রথমত, চাকরির বাজারের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে বড় ধরনের সমন্বয়হীনতা রয়েছে। চাকরির বাজাওে যে চাহিদা রয়েছে, সে রকম লোক আমরা তৈরি করতে পারছি না। আবার প্রতিবছর যেসব শিক্ষিত লোক চাকরির বাজারে যুক্ত হচ্ছেন, তাঁদের উপযোগী চাকরি নেই। গত ১০ বছরে দেশে স্নাতক পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কারণ, দেশে প্রতিনিয়ত সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে। ১০ বছর আগেও বছরে ২ থেকে আড়াই লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করে চাকরির বাজারে যুক্ত হতেন। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে চার-পাঁচ লাখে উন্নীত হয়েছে। আমাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বেশির ভাগ শিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীরা শহর ও শোভন কাজ করতে চান। কিন্তু শহরে যত চাকরিপ্রার্থী প্রতিবছর তৈরি হচ্ছে, সেই পরিমাণ চাকরির সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।’

দ্বিতীয়ত, দেশে বর্তমানে চাকরির সুযোগ বাড়ছে উৎপাদনশীল ও কৃষি খাতে। দু’টি খাতে আবার স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস তরুণদের কাজের সুযোগ কম। এ দুই খাতে কারিগরিভাবে দক্ষ লোকের চাহিদা বেশি। কিন্তু যেসব শিক্ষিত যুবক চাকরির বাজারে রয়েছেন, তাঁরা এসব কাজে নিজেদের যুক্ত করতে চান না।
এ ছাড়া করোনার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে যেসব শিক্ষিত যুবকেরা নিজেরা ছোটখাটো ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে স্বকর্মসংস্থানে যুক্ত ছিলেন, তাঁরাও বেকার হয়ে পড়েছেন। এসব ছোট ছোট উদ্যোক্তাদের হাতে সরকারের প্রণোদনার অর্থও খুব একটা পৌঁছায়নি। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতেও শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে গেছে। দেশে শিক্ষিত বেকার বেড়ে যাওয়ার এটি তৃতীয় কারণ।

একসময় শিক্ষিত তরুণেরা ভালো বেতনের আশায় বেসরকারি চাকরির প্রতি বেশি আকৃষ্ট ছিলেন, এখন হয়েছে ঠিক উল্টো। সরকারি চাকরিতে যেভাবে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে, বেসরকারি খাত সেই তুলনায় অনেক পিছিয়ে। এখন মেধাবী ও শিক্ষিত তরুণেরা বেসরকারি চাকরির বদলে সরকারি চাকরিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতিও নেন তাঁরা। আর এ সময়টাতে তাঁরা স্বেচ্ছায় বেকার থাকার পথকে বেছে নেন। এতেও শিক্ষিত বেকারত্বের হার বেড়ে যাচ্ছে।
এখন সময় এসেছে বাজারভিত্তিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করার। শিক্ষিত জনগোষ্ঠী তৈরির নামে বেকারত্ব না বাড়িয়ে চাহিদানির্ভর শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তোলা। বাজারে চাহিদা কারিগরি শিক্ষার। আর আমরা নতুন নতুন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে সেখানে বিবিএ, এমবিএ শিক্ষা চালু করছি। কিন্তু এত বিবিএ-এমবিএর আদৌ দরকার আছে কিনা তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।

বেকারত্ব মোকাবিলায় গতানুগতিক চেষ্টায় বেশি কাজ হবে না। এ সমস্যার একটি সমাধান হতে পারে কারিগরি শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থায় বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা। বিবিএ পড়া বা ইংরেজিতে বা ইতিহাসে অনার্স পড়া একজন শিক্ষার্থীকে যেকোনো একটি কারিগরি বিষয়ে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আরেকটি সমাধান হতে পারে ইন্ডাস্ট্রিকে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা। সরকার প্রতিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট দিতে পারে, সবাই নির্দিষ্টসংখ্যক ‘ফ্রেশ’ গ্র্যাজুয়েটকে প্রতিবছর তিন থেকে ছয় মাসের জন্য ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ দেবে। তাদের বেতন সরকার সরাসরি মোবাইল হিসাবে দিয়ে দেবে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো তরুণদের সুযোগ দিতে উৎসাহিত হবে। কারণ, এতে তাদেও কোনো খরচ হবে না। তাদের মূল দায়িত্ব হবে ‘অন দ্য জব’ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। প্রশিক্ষিতদের অনেকেরই প্রশিক্ষণ শেষে সেই প্রতিষ্ঠানেই নিয়মিত চাকরি হতে পারে। এতে একদিকে যেমন প্রশিক্ষণের সমস্যার সমাধান হবে, অন্যদিকে অনেক নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হবে।

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সমাজ ও রাষ্ট্রের চাহিদা মেটাতে অক্ষম। এ কথা সরকারের নীতিনির্ধারকেরা বক্তৃতা-বিবৃতিতে স্বীকার করলেও সেই শিক্ষাকে কীভাবে যুগোপযোগী করা যায়, সে ব্যাপারে কার্যকর কোনো ভূমিকা নিতে দেখা যায় না। সবকিছুই চলছে গতানুগতিকভাবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমন সব বিষয় যুক্ত করছে, যার সঙ্গে চাকরির বাজারের বিন্দুমাত্র সংযোগ নেই। সে ক্ষেত্রে আমাদের উচ্চশিক্ষা নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার। চাকরির বাজারে যে শিক্ষার চাহিদা নেই, সেই শিক্ষা নিয়ে কী লাভ? উচ্চশিক্ষার নামে এ অপচয় মেনে নেওয়া যায় না। মনে রাখতে হবে, একজন স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীর পেছনে কেবল পরিবারই বিনিয়োগ করে না, রাষ্ট্রেরও বিনিয়োগ থাকে। তাই উচ্চশিক্ষিত বেকার তৈরি মানে রাষ্ট্রেরও বিরাট ক্ষতি।

২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি করা হয়েছিল। কিন্তু গত ১২ বছরেও তা জাতীয় শিক্ষায় ইতিবাচক ফল এনেছে বলা যাবে না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই, পুরো উচ্চশিক্ষা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।

আমরা জানি, জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি) এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানব উন্নয়ন সূচক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বর্ধিত জনসংখ্যাকে সম্পদ হিসেবে অভিহিত করেছিল। সংস্থাটির মতে, ২০৩০ সালে বাংলাদেশে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১২ কোটি ৯৮ লাখে পৌঁছাবে- যা হবে জনগোষ্ঠীর ৭০ শতাংশ। কিন্তু জনমিতির এই সুফল কাজে লাগাতে হলে প্রত্যেক নাগরিককে যেমন দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, তেমনি তাদের উপযুক্ত কাজের সংস্থানও করতে হবে।
আমরা মনে করি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার ভিত ও মান শক্ত না করেই একের পর এক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে- যা সনদ বিতরণ করলেও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর এ কারণে বাংলাদেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বেকার থাকা সত্ত্বেও অনেক খাতে উচ্চ বেতন দিয়ে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাদের যুক্তি, দেশে দক্ষ জনশক্তির অভাব রয়েছে। এর অর্থ দাঁড়ায় আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সময়ের চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে এ অবস্থার অবসানের দিকেই সংশ্লিষ্টদের জোর দিতে হবে। কমংসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাজে লাগাতে হবে।

হীরেন পণ্ডিত: গবেষক ও প্রাবন্ধিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

slot qris

slot bet 100 rupiah

slot spaceman

mahjong ways

spaceman slot

slot olympus slot deposit 10 ribu slot bet 100 rupiah scatter pink slot deposit pulsa slot gacor slot princess slot server thailand super gacor slot server thailand slot depo 10k slot777 online slot bet 100 rupiah deposit 25 bonus 25 slot joker123 situs slot gacor slot deposit qris slot joker123 mahjong scatter hitam

sicbo

roulette

pusathoki slot

orbit4d slot

pusatmenang slot

https://www.firstwokchinesefood.com/

orbit4d

https://www.mycolonialcafe.com/

https://www.chicagotattooremovalexpert.com/

fokuswin

slot bet 200

pusatmenang

pusatplay

https://partnersfoods.com/

https://www.tica2023.com/

https://dronesafeespana.com/

https://mrzrestaurants.com/

slot server luar