শেখ হাসিনা মানুষের কল্যাণে নিবেদিত এক বিশ্বনেতা

হীরেন পন্ডিত: বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। শেখ হাসিনা এখন বিশ্বনেতাদের কাছে প্রশংসিত এক নাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি উলেস্নখ করেন, আমার বাবা এ দেশের মানুষকে স্বাধীনতা অর্জন করে দিয়েছেন এবং সেই স্বাধীনতা রক্ষা এবং সবাইকে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই তার লক্ষ্য।

 বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণের আদর্শ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক, প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দর্শনের ভিত্তি রচনা করে আওয়ামী লীগ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, মুক্তির মহানায়ক, স্বাধীনতা নামক মহাকাব্যের অমর কবি, বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত ও আদর্শের সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা। তিনি বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার শেষ আশ্রয়স্থল। সংকটে তিনি পরিত্রাতা। সংগ্রামে তিনি অবিচল আস্থার মূর্তপ্রতীক।

বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকান্ডের পর শেখ হাসিনা চরম দুঃসময়ে ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন। গণতন্ত্রের সংগ্রামে দীর্ঘ পথ হেঁটেছেন। বারবার মৃতু্যর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। আওয়ামী লীগকে জনপ্রিয় দল হিসেবে ২১ বছর পর ক্ষমতায় এনেছেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির পাশাপাশি সবরকম শোষণ, বঞ্চনা, অন্যায়, অবিচার, জুলুমের বিরুদ্ধে সব সময় রাজনৈতিকভাবে সোচ্চার, প্রতিবাদী ভূমিকা রেখে এসেছেন।

প্রচলিত সব নীতির মধ্যে রাজনীতিকে সর্বোত্তম নীতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ রাজনীতি আবর্তিত হয় জনকল্যাণ এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে সামগ্রিক তাৎপর্যকে ঘিরে। বিনা পারিশ্রমিকে জনগণের স্বার্থে স্বেচ্ছায় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত করাই প্রকৃত রাজনীতির চর্চা। রাজনীতির মূল লক্ষ্য জনকল্যাণ। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মতো তৃণমূল শক্তিসম্পন্ন দলগুলোসহ সবার ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। আমরা এখনো আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বড় সমস্যা। দারিদ্র্য হ্রাস পেলেও তা এখনো পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। বেকারত্ব বাড়ছে। আয় বৈষম্যও বাড়ছে। দুর্নীতিও একটি বড় বাধা। এসব সমস্যা তুলে ধরে বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন দূরদর্শী নেতৃত্ব। জনকল্যাণই প্রতিটি রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এটা করা গেলে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। শেখ হাসিনা এখন বিশ্বনেতাদের কাছে প্রশংসিত এক নাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে তিনি তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি উলেস্নখ করেন, আমার বাবা এ দেশের মানুষকে স্বাধীনতা অর্জন করে দিয়েছেন এবং সেই স্বাধীনতা রক্ষা এবং সবাইকে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই তার লক্ষ্য।

আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা আশা করি, আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। আমরা বাংলার মানুষের জন্য আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত যেমন বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের জন্য জীবন দিয়েছেন। আবেগঘন কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমার বাবা-মাসহ সবাইকে হারিয়েছি। আমাকে দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল, তারপরও আমি দেশে আসতে পেরেছি। আমার পিতা বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করতে জীবন দেওয়ার জন্য আজীবন লড়াই, সংগ্রাম করে গেছেন। তার আদর্শ ও লক্ষ্য প্রতিষ্ঠায় আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার জন্য ছয় দফা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার মধ্যে একটা নিয়ে ছিল সন্দেহ। কারণ তিনি জানতেন, ছয় দফায় কোনো সমাধান হবে না। এই স্বাধীনতার জন্য তাকে জেল, জুলুম, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে নিয়ে যাওয়া হয়। খুব গরম একটি জায়গা যেখানে তাকে রাখা হয়েছিল এবং পরে হিমশীতল ঠান্ডায়ও তাকে রাখা হয়। বন্দি হিসেবে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মাথার পেছনে আঘাত করা হয়।

স্বাধীনতার পর বিধ্বস্ত দেশ গড়তে যা যা করা দরকার বঙ্গবন্ধু সবই করেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় মাত্র সাড়ে তিন বছরে তিনি সব মৌলিক কাঠামো তৈরি করেছেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। যারা সামরিক আইন জারি করে বা সংবিধান স্থগিত করে ক্ষমতা দখল করে তারা কি গণতন্ত্র দেয়? সামরিক আইনের অধ্যাদেশ দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসে তারা কখনো গণতন্ত্র দিতে পারে না। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন, তিনি এ দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন, এটাই কি তার অপরাধ, তাকে হত্যা করা হয়েছে? তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি যাতে কেউ গৃহহীন ও বেকার না থাকে। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব একটু সমস্যা তৈরি করলেও আমরা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। করোনা মোকাবিলায় আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি এবং প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।

আওয়ামী লীগ সরকার এখন দেশ পরিচালনা করছে। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাঙালির প্রতিটি সংগ্রামে এই দলটির রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ পেয়েছিল। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় তার কন্যা শেখ হাসিনা এখন দেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। উন্নয়নের পাশাপাশি তিনি মানুষের মন জয়ের ওপর জোর দেন। তিনি নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করতে এখন থেকেই কাজ করার আহ্বান জানান। গরিব-অসহায় মানুষকে খোঁজার কথা বলেন তিনি। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

রাজনীতি হলো সর্বোত্তম নীতি কিন্তু রাজনৈতিক অনুশীলন হলো একটি নিত্ত-নৈমিত্তিক বিষয়। যদিও রাজনৈতিক অনুশীলনকারীরা নিজের বা দলের স্বার্থে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল করে বা অন্য কোনো কারণে জনস্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং অন্য দলের জনকল্যাণের জন্য উপস্থাপিত প্রস্তাবের বিরোধিতা করেও তারা নিজেদের রক্ষা করার ব্যর্থ চেষ্টা করে। জনকল্যাণের স্বার্থে তা গ্রহণ করা হয়েছে বলে মত প্রকাশ করে জনগণের ক্ষোভ। সব রাজনৈতিক দলের দর্শন ও দলীয় ইশতেহার এক না হলেও প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী স্স্নোগান জনকল্যাণমূলক। কিন্তু নির্বাচনপরবর্তী সময়ে ওই স্স্নোগানটি আইনসভার সদস্যদের স্বাধীন আইন প্রণয়নের কাজে জনকল্যাণে অবদান রাখতে কতটা ভূমিকা রাখতে পারে, বিভিন্ন দেশের আইন প্রণয়ন পদ্ধতি, খসড়া প্রস্তাবের ওপর মতামত প্রদান। সব প্রস্তাবকে আইনে পরিণত করার জন্য এবং স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে এবং বিপক্ষে ভোট দেওয়ার বাধ্যবাধকতা। মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে জনকল্যাণের স্স্নোগান আন্তরিক নয়, প্রকৃত গণতন্ত্র চর্চাকারী সমাজে জনগণ তা যাচাই করার সুযোগ পায় এবং আগামী নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জনগণ তা মূল্যায়নের সুযোগ নেয়।

সৃষ্টির মধ্যে মানুষই একমাত্র রাজনৈতিক জীব। জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, পরবর্তী রাজনৈতিক উত্তরসূরি জন্মসূত্রে রাজনৈতিক পরিবার থেকে আবির্ভূত হয় এবং বাচন, কর্ম ও আচার-আচরণে পূর্বসূরিদের অনুসরণ-অনুকরণের মতো সহজ অভ্যাসের চর্চা বিরাজ করে। রাজনীতি মূলত জনস্বার্থের জন্য এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে কল্যাণমূলক প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য, কিন্তু রাজনীতিবিদরা প্রায়শই নিজেদের স্বার্থে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ না করে বিভাজন সৃষ্টি করে ব্যক্তিগতভাবে এবং দলীয়ভাবে সুবিধা ভোগ করার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে দেশ ও অঞ্চল ভেদে তাদের প্রচারের ধরন ভিন্ন হয়। কখনো ধর্ম, কখনো বর্ণ, কখনো বর্ণভেদ, কখনো দেশি-বিদেশি ইত্যাদি বিভাজন সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

আধুনিক রাষ্ট্র গঠিত ও পরিচালিত হয় রাজনীতির প্রক্রিয়ায়, যেখানে জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এবং তাদের কল্যাণে ব্যবস্থাপনার দর্শন বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে- যা রাষ্ট্রকে প্রাচীন বা মধ্যযুগীয় সামন্ততান্ত্রিক একনায়কতন্ত্র থেকে মুক্ত করেছে। এই কারণে, আধুনিক রাষ্ট্র নির্মাণে রাজনীতি একটি অপরিহার্য আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়। আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জনগণ তাদের আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে পারে। যে কারণে রাষ্ট্র দ্রম্নত তার চরিত্র পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে। একটি আধুনিক রাষ্ট্র এখন খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা এবং বাসস্থানসহ সব মৌলিক অধিকারের শর্ত পূরণ করে মানুষকে উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা দেয়। রাজনীতি বন্ধ করে কোনো সমাজ আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে না। সে কারণে বলা হয়, আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, জীবনব্যবস্থা এবং জনগণের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নয়নের গ্রহণযোগ্য উপায় হলো রাজনৈতিক উপায়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। আধুনিক রাষ্ট্রে রাজনীতির বিকল্প কোনো ব্যবস্থা কল্পনা করা যায় না।

২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার বড় ষড়যন্ত্র হয় রাজনীতির মাঠে। রাজনীতি তখন রাজনীতিবিদদের জন্য সত্যিই জটিল হয়ে যায়। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বাংলাদেশের রাজনীতি আবার আগের জায়গায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার পরিবর্তনের সনদ ও রূপকল্প-২০২১ প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন করেছে।

আর কয়েক মাস পর দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতি আবারও পরস্পরবিরোধী অবস্থানে যেন মাঠের ম্যাচের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু রাজনীতি শুধু ক্ষমতায় থাকা এবং থাকা নয়। জনগণের কল্যাণ উপলব্ধি করার জন্য একটি আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সে কারণে, এই বিশাল এবং ঘনবসতিপূর্ণ দেশটির জন্য এখন একান্ত প্রয়োজন যে তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নয়, বরং রাজনৈতিক দলগুলোকে কতটা নিতে চায় এবং কতটা দিতে চায় তা জনগণের সামনে তুলে ধরা। একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার পরিকল্পনা। আধুনিক গণতান্ত্রিক রাজনীতির সঠিক প্রতিফলন ঘটাতে হলে অর্থনৈতিক উনয়নের পাশাপাশি শিক্ষা ও সংস্কৃতির মান উনয়ন করতে হবে। তবেই আমাদের জনগণের অস্তিত্ব শুধু টিকে থাকবে না, চতুর্থ শিল্প বিপস্নবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিকশিত হবে। এখন সেই রাজনীতি দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।

বাঙালির নিজস্ব রাজনৈতিক দল তথা পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল হিসেবেই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা পায়। ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা তথা সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি। এগুলোই হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মূলনীতি। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংহত করা এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা সমুন্নত রাখা। ২. প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণ করা। ৩. রাষ্ট্রের সব নাগরিকের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি এবং কল্যাণ নিশ্চিত করা। ৪. মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলা। ৫. বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে তুলে ধরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দলটি গড়ে ওঠে অসাম্প্রদায়িক সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দল হিসেবে। আর তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দলটি মডার্ন ও সেকু্যলার ডেমোক্রেটিক পার্টি। যে কোনো সংকটে আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি আছে এবং নেতৃত্ববিহীন অবস্থায় নতুন নেতা তৈরির সক্ষমতা আছে। বঙ্গবন্ধুর মৃতু্যর পর চরম নেতৃত্বহীন অবস্থায়ও দলটি নতুন নেতৃত্ব তৈরিতে সক্ষমতা দেখিয়েছে। বাংলাদেশে যখনই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেছে, তখনই বাংলাদেশের মানুষ লাভবান হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২২, গত ১৪ বছরে অভূতপূর্ব আর্থসামাজিক উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের দৃষ্টি কেড়েছে। বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বে একটি উন্নয়নের রোল মডেল। কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দাও কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই অর্জনের পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত সরকার। আর এই দলের নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

জনসমর্থন হচ্ছে রাজনৈতিক দলের শিকড়। আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বলা চলে, এই দলটির ইতিহাসই হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল সোনার বাংলা গড়া। শেখ হাসিনা সেই লক্ষ্যের উত্তরণ ঘটিয়েছেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে। বাংলাদেশকে শুধু উন্নয়নশীল দেশ নয়, একটি উন্নত দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যও তার।

বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন। দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন শোষিতের গণতন্ত্র। সেই অসাম্প্রদায়িক উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি দেশের মানুষের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনো বিকল্প নেই। দু’টি কারণও তুলে ধরা যেতে পারে। একটি অর্থনৈতিক, অন্যটি রাজনৈতিক। আজকের বাংলাদেশ এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। নিঃসন্দেহে এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতা ছিল বাঙালির মহান অর্জন। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের উত্তরণ নিঃসন্দেহে আলাদা তাৎপর্য বহন করে। উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়।

নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ, ধনী-দরিদ্র-নির্বিশেষে সবার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার সুনিশ্চিত করা, শহর ও গ্রামের সেবা প্রাপ্তিতে দূরত্ব হ্রাস করা সবই ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও প্রযুক্তির কল্যাণে এখন গ্রামে বসেই যে কেউ চাইলেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করতে পারছে। এ সবই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতির ফলে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার সফলভাবে বাস্তবায়নের পর এখন নতুন কর্মসূচি এসেছে। সেটি হলো স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি এই চারটি মূল ভিত্তির ওপর গড়ে উঠবে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ। হীরেন পন্ডি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *