মূল্যস্ফীতি ও আয় বৈষম্য কমানোর জন্য কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন


হীরেন পণ্ডিত: দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি ও বৈষম্য কমানো আসন্ন বাজেটের অনতম প্রধান একটি চ্যালেঞ্জ। এ ব্যাপারে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। আবার সুদের হার বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এর পাশাপাশি কর্মসংস্থান তৈরি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিনিময় হার এক রেটে নিয়ে আসার বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে এবং যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে ডলারের সিঙ্গল রেট আসবে। ২০২৩-২৪ সালের বাজেট হবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার। রিজার্ভ বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে। রেমিট্যান্স হুন্ডিতে আসা বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করে শিল্পের উপযোগী দক্ষ শ্রমিক তৈরির প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপশি তৈরি পোশাক কারখানায় কয়েকটি ক্ষেত্রে কর্মীদের মধ্যে দক্ষতার যে ঘাটতি রয়েছে সেগুলো দূর করার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। তবে মূল কথা হলো রাষ্ট্র ও সরকারের জোরালো অঙ্গীকার রয়েছে এইসব বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার এবং বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা রয়েছে বৈষম্য কমানোর জন্য। সরকার সে লক্ষ্যে কাজ করছে। ব্যক্তি খাতে আরো বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপর কাজ করতে হবে। না হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। গত তিন-চার বছর ব্যক্তি বিনিয়োগ কিছু কমেছে এটাকে বাড়াতে হবে। বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও কিছু সমস্যা রয়েছে সেগুলোতে আরো নিবিড় মনিটরিং ও পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কখনোই সম্ভব নয়। বর্তমান মূল্যস্ফীতি বৈশ্বিক কারণে সৃষ্ট। সুদের হার বাড়িয়ে এর নিয়ন্ত্রণ হবে না। সরবরাহ বাড়াতে হবে। ২০২৩-২৪ বাজেটে সরকার মূল্যস্ফীতিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। সরকারের বাজেট হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অন্যতম উপায়। সবাইকে কাজ করতে হবে কিভাবে দেশের অর্থনীতিকে কোভিড পূর্ববর্তী অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যায়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কোভিড এর আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়াই ২০২৩-২৪ সালের বাজেটের মূল লক্ষ্য।

আমাদের এখনো একটি অভিন্ন ডলারের রেট নেই। বিভিন্ন রেট রয়েছে ডলারের জন্য। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে ডলারের রেট এক অঙ্কে চলে আসবে। প্রতিদিন যদি একটু একটু করে রিজার্ভ বাড়ে সে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যদি সেটা হয় তাহলে সেটা দেশের জন্য ভালো। সেই সঙ্গে আমদানি খরচ যদি কম থাকে, তাহলে সমস্যা নেই; কিন্তু রিজার্ভ যত বিলিয়ন হয় না কেনো যদি খরচ একবারেই অনেক বেশি হয়ে যায়, তাহলে সরকারকে আরো চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকতে হবে। সরকার ও ব্যাংক চাইলেও হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এ জন্য সমন্বিতভাবে কাজ চলছে। বাংলাদেশ এ জন্য ভারতের মডেল অনুসরণ করে অ্যাপের মাধ্যমে রেমিট্যান্স আনার জন্য কাজ করছে। তাছাড়া এর আগে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা সস্তায় বিদেশি ঋণ গ্রহণের কারণে রিজার্ভ বেড়েছিল; কিন্তু এখন সেই ঋণ নেই। সেই সঙ্গে যারা ঋণ গ্রহণ করেছিলো তারা ডলারের মাধ্যমে তা পরিশোধ করছে। এরই প্রভাব পড়েছে রিজার্ভের ওপর। বর্তমান ফিন্যানশিয়াল অ্যাকাউন্ট ব্যালান্সের ঘাটতি মাইনাস ২ শতাংশ আছে। সেটি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মাসের মধ্যে শূন্যে নামিয়ে আনা হবে।
গবেষকরা বলছেন, ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী সহজ বিষয় পড়তে পারে না। তাই মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া শহরের বৈষম্য ব্যাপক বাড়ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দক্ষ কর্মীর অভাব রয়েছে, ফলে দক্ষ কর্মী পাচ্ছে না সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানিগুলো। দক্ষ কর্মীর এই ঘাটতি রয়েছে মূলত হালকা ও মাঝারি প্রকৌশল এবং ইলেকট্রনিকস খাতে। ‘স্কিল মিসম্যাস অ্যান্ড লেবার প্রডাক্টিভিটি : ইভডেন্স ফর্ম টু ইঞ্জিয়ারিং সেক্টর ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দুই ধরনের অসংগতি দেখা যায়। ভার্টিক্যাল অসংগতি ও হরাইজন্টাল অসংগতি। ভার্টিক্যাল অসংগতি বলতে মূলত চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষিত কর্মী না পাওয়া এবং হরাইজন্টাল অসংগতি বলতে দক্ষতা অনুযায়ী লোক না পাওয়া। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে শতাংশের হারে ভার্টিক্যাল অসংগতি রয়েছে ৬০ শতাংশ। এ ছাড়া যাঁরা কারখানার কাজ করেন তাঁদের বেশির ভাগই কম শিক্ষিত। পাশাপাশি ছোটখাটো কারখানাগুলোতে ভার্টিক্যাল অসংগতি বেশি দেখা যায়। শতাংশের হারে তা ৮৩ শতাংশ।

তৈরি পোশাক খাতে উৎপাদন পর্যায়ে তুলনামূলক দক্ষতার ঘাটতি কম, কিন্তু ব্যবস্থাপক পর্যায়ে ঘাটতি বেশি। পোশাক কারখানা মালিকরা যে ধরনের কর্মী চান, সেই ধরনের লোক পাওয়া যায় না। পোশাক খাতে কর্ম খালি হলে এক সপ্তাহের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ কারখানায় তা পূরণ হয়ে যায়, কিন্তু দক্ষ কর্মী পাওয়া কঠিন।

উন্নয়ন প্রকল্পের সময় বৃদ্ধির ফলে অনেক বেশি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। ৮০ শতাংশ প্রকল্পে ব্যয় বেড়েছে। ব্যয় ও সময় বেড়েছে ৫০ শতাংশ, ব্যয় ও সময় কোনোটিই বাড়েনি ১৩ শতাংশ প্রকল্পে। প্রকল্পগুলোর গড় ব্যয় বেড়ছে ২৬ শতাংশ এবং গড় সময় বেড়েছে ৯৫ শতাংশ। আমাদের দেশে যেসব পরিকল্পনা করা হয়, তার বেশির ভাগই করা হয় বর্তমান পরিস্থিতিতে মাথায় না রেখে; কিন্তু তা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের পরিস্থিতি বিবেচনায় নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের শিক্ষার ঘাটতি দিন দিন বাড়ছে। আমরা পৃথিবীর জনবহুল দেশ। জনবল আমাদের বড় সম্পদ। সেগুলো দক্ষ করে তুলতে হবে। টাকা দিয়ে শিক্ষা স্বাস্থ্যের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বোরো ধান, আমন ধান ভালো হচ্ছে। এতে দাম কমার কথা, কিন্তু বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। ভারত যদি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাহলে আমরা কেন তা পারছি না?’
করোনা মহামারির কারণে ধনী আরো ধনী হয়েছে এবং দরিদ্র আরো দরিদ্র হয়েছে। ধনী, মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও দরিদ্রের ব্যবধান কেবল বেড়েই চলছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পাশাপশি এ বিষয়টি নিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। দারিদ্র্য এবং অসমতা বৃদ্ধির ফলে দেশে ও সমাজে যে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে, তা কমাতে উদ্যোগ নিতে হবে। আর পারিবারিক অশান্তিসহ সামাজিক ও পারিবারিক বৈষম্য বৃদ্ধি হ্রাসে দৃষ্টি দিতে হবে।
সরকারি হিসাবে মাথাপিছু আয়ের সুফল সাধারণ মানুষ কতটা পাচ্ছে সে প্রশ্ন সামনে আসছে। করোনার কারণে দুই বছরে অধিকাংশ মানুষের আয় কমে গেছে বলে জানা যায় বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষকে ভোগব্যয় কমাতে হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রেই। এদিকে সাধারণ মানুষ কষ্টে থাকলেও দেশে ধনীর অনুপাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশে কোটিপতির সংখ্যা লাখ পেরিয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, দেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে- এগুলো আশা জাগানিয়া ও ইতিবাচক বিষয়। সেই সঙ্গে ধনী-গরিবের ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে সে বিষয়েও কাজ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগ, দপ্তর, মন্ত্রণালয়গুলো সময়ে সময়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে, যার ফলে সম্ভাবনার নতুন নতুন খাতের বিকাশ ঘটে। সম্ভানাময় নতুন নতুন খাতগুলো বাংলাদেশের সমৃদ্ধি অর্জনে ও অগ্রযাত্রায় বেশ শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবে। বাংলাদেশের মানুষ কোনোভাবেই অক্ষম, দুর্বল, মেধাহীন নয়। তারা অনেক পরিশ্রম করতে পারে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ যারা এর আগে বেকারত্ব, দারিদ্র্য, আর অসহায়ত্বের বেড়াজালে নিজেদের বন্দি করে রেখেছিল, তারা এখন নিজের মেধা, বুদ্ধিমত্তা, শক্তি, সাহস, পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে সম্ভাবনার নতুন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপনে এগিয়ে আসছেন। উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে নিজেই নিজের ভাগ্য নতুনভাবে গড়ে তুলছেন অনেকে। এভাবে সবার সম্মিলিত উদ্যোগে পাল্টে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকা, জনপদের চিত্র।
দারিদ্র্যবিমোচনের বিভিন্ন প্রয়াস বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই প্রশংসনীয় সাফল্য সত্তে¡ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমাদের যে আরো অনেক দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে সেটি পরিষ্কার হয়েছে সরকারি সংস্থা পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি), বিআইডিএস ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বিভিন্ন প্রতিবেদনে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কর্মসংস্থান হ্রাস ও সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীতে অনিয়মের কারণে গরিব মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে বাড়ছে ধনীদের সম্পদ। তবে সরকারের পরিকল্পনাবিদরা মনে করছেন, কোনো দেশ যখন দ্রæত উন্নয়ন করে, তখন স্বাভাবিকভাবেই বৈষম্য বাড়ে। সরকার বৈষম্য কমাতে দরিদ্রদের জন্য নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাই বৈষম্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশজুড়ে সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং আয়বৈষম্য কমাতে সরকারের নানা প্রতিশ্রæতি ও উদ্যোগের সুফল যথাযথভাবে দৃশ্যমান নয়। বরং দেশের গরিব মানুষ দিন দিন আরো গরিব হচ্ছে, দ্রæত সম্পদ বাড়ছে ধনীদের।

বিশ্বব্যাংকের ২০১৮ সালের প্রকাশিত প্রতিবেদনে ধনী-দরিদ্র বৈষম্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। এই তালিকায় বাংলাদেশের সামনে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ভারত রয়েছে। বাকি তিনটি দেশ হলো আফ্রিকার নাইজেরিয়া, কঙ্গো ও ইথিওপিয়া। আবার অতি ধনী বা ধনকুবেরের সংখ্যা বৃদ্ধির হারের দিক দিয়েও বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। এ হার যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, ভারতসহ ৭৫টি বড় অর্থনীতির চেয়ে বেশি। শতকরা হিসাবে এক বছরে কোটিপতি বেড়েছে ১৭ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদ এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে বৈষম্যের কারণে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ায় মাথাপিছু আয় বাড়লেও দেশের মানুষের প্রকৃত আয় কতটা বেড়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ। মাথাপিছু আয়ের ৪টি খাত। কৃষি, শিল্প, সেবা এবং প্রবাসীদের আয় (রেমিট্যান্স)। অর্থাৎ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সঙ্গে রেমিট্যান্স যোগ করলে জাতীয় আয় পাওয়া যায়। আর জাতীয় আয়কে মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে মাথাপিছু আয় পাওয়া যায়।
বিবিএসের হিসাব বলছে, বর্তমানে দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হার মোট জনসংখ্যার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। এর মধ্যে অতিদরিদ্র ৭ শতাংশ। এদিকে আয় বাড়লেও কর আদায় বাড়েনি। ১৭ কোটি মানুষের দেশে টিআইএন রয়েছে ৭৫ লাখ এর মতো। মাত্র ২৩ লাখ মানুষ আয়কর দেন। বর্তমানে কর আদায় জিডিপির ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ায় যা সবচেয়ে কম। ২০১০ সালে জিডিপিতে বড় ও মাঝারিশিল্পের অংশগ্রহণ ছিল ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ। ২০১৮ সালে তা ১৮ দশমিক ৩১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু ২০১০ সালে জিডিপিতে ক্ষুদ্রশিল্পের অংশগ্রহণ ছিল ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর ২০১৮ সালে তা মাত্র ৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ হয়েছে। এর অর্থ হলো, শিল্প খাত বড় ব্যবসায়ীদের দখলে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বাংলাদেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে কোনো দেশের তিন বছর গড় মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬ ডলার ছাড়ালেই তা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পড়ে। এ হিসাবে বাংলাদেশ এই সীমা অনেক আগেই পার করেছে।

সংস্থাটির তথ্য অনুসারে, মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬ ডলার থেকে শুরু করে যেসব দেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১২ হাজার ৭৩৬ ডলার, তারা মধ্যম আয়ের দেশ। এর মধ্যে আবার আয় ১ হাজার ৪৬ ডলার থেকে ৪ হাজার ১২৫ পর্যন্ত হলে তা হবে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ এবং আয় ৪ হাজার ১২৬ ডলার থেকে শুরু করে ১২ হাজার ৭৩৬ ডলার হলে দেশগুলোকে বলা হয় উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ। এর চেয়ে বেশি মাথাপিছু আয় হলে সেই দেশগুলোকে বলা হয় উচ্চ আয়ের দেশ। আর সংজ্ঞা অনুসারে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও রিসার্চ ফেলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *