‘ইত্যাদি’ এবার নেত্রকোণার বিজয়পুরে

দেশের টেলিভিশন মিডিয়ার জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহে প্রথম স্থান ধরে রেখেছে ‘ইত্যাদি’। তাও আবার গত তিন দশক ধরে। মানবিক প্রতিবেদন প্রচারের কারণে ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানটি সমালোচকদেরও প্রিয়। তাছাড়া আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রতœসম্পদ, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্থান, আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো সম্পর্কে জানতে এবং জানাতে ‘ইত্যাদি’র তুলনা নেই। এ কারণে দেশের নানা প্রান্তের মানুষ ‘ইত্যাদি’ দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘ইত্যাদি’ টিম ভ্রমণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে নৈসর্গিক শোভার লীলাভ‚মি নেত্রকোনায়।

দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান নেত্রকোনাকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত চারজন দর্শক নির্বাচন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচিত দর্শকদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক শিল্পী মলয় কুমার গাঙ্গুলী। যার বাড়িও নেত্রকোনায়। নির্বাচিত দর্শক এবং আমন্ত্রিত শিল্পী মলয় কুমার গাঙ্গুলী গেয়েছেন তার নিজের গাওয়া চারটি বহুশ্রæত জনপ্রিয় গানের অংশবিশেষ।

শেকড় সন্ধানী ‘ইত্যাদি’তে এবারের পর্বেও রয়েছে কয়েকটি হৃদয় ছোঁয়া প্রতিবেদন। চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ ট্রেনের যাত্রী, গার্ড ও চালকের কাছে এক ভয়ংকর আতঙ্ক। এই বিষয়ে প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে একদল তরুণ-তরুণী। এবারের অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয় এই তরুণদের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম। রয়েছে মৌলভীবাজারের মানবিক মানুষ অমলেন্দু কুমার দাশের ওপর একটি মানবিক প্রতিবেদন। রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অবস্থিত গিয়ংবকগাং প্রাসাদের ওপর একটি প্রতিবেদন।

এছাড়াও নেত্রকোনার মঞ্চে যথারীতি সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে রয়েছে নানি-নাতির কথার মাতামাতি। টেলিভিশন প্রযুক্তির উন্নয়ন বনাম অনুষ্ঠানের মানের অবনমন, ইন্টারনেট আসক্তির নেতিবাচক প্রভাব, ভুলে ভরা জীবন, সবিনয়ে আমন্ত্রণ-ক্রোধে প্রত্যাখ্যান, ভোট ভিখারি, ইউটিউবে টাকা কামানোর ধান্দা, সেলফি ভাইরাস, ননসেন্স মানুষের রাস্তায় হাঁটার লাইসেন্স, সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী, জীবনের ওপর ফাইলের চাপসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। এবারের অনুষ্ঠানে মাটি ও মানুষের শিল্পী নেত্রকোনার সন্তান কুদ্দুস বয়াতি এবং ইসলাম উদ্দিন পালাকার দু’জনে একসঙ্গে তাদের পরিচিত ঢংয়ে নেত্রকোনা অঞ্চলের দু’টি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। গানটির সঙ্গীতায়োজন করেছেন মেহেদি। এছাড়াও নেত্রকোনাকে নিয়ে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামানের কথায়, হানিফ সংকেতের সুরে এবং মেহেদির সঙ্গীতায়োজনে একটি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন বিজয়পুরেরই স্থানীয় দুই শতাধিক গারো, হাজং এবং বাঙালি নৃত্যশিল্পী। কোরিওগ্রাফি করেছেন মালা মার্থা আরেং, কণ্ঠ দিয়েছেন পুলক, তানজিনা রুমা, মোমিন বিশ্বাস ও নোশিন তাবাসসুম। ‘ইত্যাদি’ রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। ফাগুন অডিও ভিশন নির্মিত ‘ইত্যাদি’ স্পন্সর করেছে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *