Togel Online

Situs Bandar

Situs Togel Terpercaya

Togel Online Hadiah 4D 10 Juta

Bandar Togel

শেখ রাসেল মানবতাবাদী এক নাম

হীরেন পণ্ডিত

মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স সাত। পিতার জন্য তার কাতরতা ছিল। পিতা পাকিস্তানের কারাগারে কিন্তু তার জেদ ছিল পিতার কাছে যাবে। স্বাধীন দেশে পিতা প্রধানমন্ত্রী, তাঁর ব্যস্ততার শেষ নেই। এরই মধ্যে রাসেল তার চিরসঙ্গী সাইকেলটি নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখে। তার সাইকেলটি ছিল পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতই প্রিয়। যেটি এখনো তার স্মৃতির নিরব সাক্ষী হয়ে আছে। পিতার একান্ত সান্নিধ্যে তার সময় কাটত কখনো কখনো। যদিও সেই মহান পিতাকে দেখার সুযোগও তার জীবনে কম হয়েছিল।

জন্ম থেকেই অনেক আলোকচিত্র সংরক্ষিত আছে শেখ রাসেলের। শেখ হাসিনার কোলে চড়ে এক কি দেড় বছরের রাসেল। মিষ্টি হাসিতে চেয়ে থাকা, পিতার কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা রাসেল; তার সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়া অথবা খাবার টেবিলে বাবার ডান পাশে দাঁড়িয়ে থাকা। ১৯৭৫ সালে শেখ কামাল ও সুলতানা কামালের বৌভাতের দিন বঙ্গবন্ধু ও সুলতানা কামালের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা কৌতূহলী বালক রাসেল। বঙ্গবন্ধুর কোলে কিংবা অন্য দুই ভাই শেখ কামাল ও শেখ জামালসহ পিতার সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা। আবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের যে ছবি আছে সেখানেও রাসেল বঙ্গবন্ধুর কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। পরিবারের সবচেয়ে ছোট সন্তান হিসেবে পিতার স্নেহে ধন্য ছিল রাসেল; আলোকচিত্রগুলো তার সাক্ষ্য বহন করে।

তবে বঙ্গবন্ধু ১৯৬৪ সালের পর যতদিন জেলের বাইরে ছিলেন তার পুরো সময়টাই রাসেলের সঙ্গে নিবিড় মমতায় জড়িয়েছিলেন। এমনকি স্বাধীনতার পর জাপান সফরে তিনি এই ছোট পুত্রকে সঙ্গী করেছিলেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রাসেলই ছিল তাঁর আনন্দের সঙ্গী। রাসেলের জন্মবার্ষিকীতে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস জানানোর প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস শেখাতে পারলে রাসেলের হত্যাকারীদের বিপক্ষে আমরা মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে পারব।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা রেণুর কনিষ্ঠ সন্তান। শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয়ভাবে। ১৯৬৪ সালে জন্মগ্রহণ করা শেখ রাসেল বঙ্গবন্ধু পরিবারকে আবেগে-আহ্লাদে মাতিয়ে রাখতো সবসময়। রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল। উত্তরাধিকারসূত্রে রাজনৈতিক পরিবেশে বেড়ে উঠছিল রাসেল। তবে তার বেড়ে ওঠার প্রথম অংশে ছিল রাজনৈতিক সংকটের কাল। তারপর যুদ্ধে জয়ী হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর স্মৃতিচারণে উল্লেখ করেছেন “১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিল ছোট্ট রাসেলকে। বয়স তার মাত্র ১০ বছর ১১ মাস। মা-বাবা, দুই ভাই, দুই ভাবি, চাচা সবার লাশের পাশ দিয়ে হাঁঁটিয়ে নিয়ে ঘাতকরা সবার শেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল রাসেলকে। ওই ছোট্ট বুকটা তখন কষ্টে বেদনায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখে আকুল আবেদন জানায়, ‘আমার হাসু আপার কাছে পাঠিয়ে দিন।’ এত মৃতদেহ দেখে যাঁদের সান্নিধ্যে স্নেহ-আদরে হেসেখেলে বড় হয়েছিল কী কষ্টই না ও পেয়েছিল। কিন্তু ঘাতকের পাষাণহৃদয় সে আকুতি শোনেনি। তারা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে অনুমতি নিয়ে শিশু শেখ রাসেলকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। কেন আমার রাসেলকে এত কষ্ট দিয়ে কেড়ে নিল ঘাতকরা?’ এর উত্তর কে দেবে?

৩০ জুলাই ১৯৭৫ শেখ হাসিনা জার্মানিতে স্বামীর কর্মস্থলে চলে যান। রাসেল খুব মন খারাপ করে থাকত সে সময়। অসুস্থ্য থাকার কারণে শেখ হাসিনা রাসেলকে সাথে করে নিয়ে যেতে পারেন নি।
শেখ হাসিনা স্মৃতিচারণে আরো বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে রাসেলের খেলাধুলার অনেক সাথি ছিল। বাড়ি গেলে গ্রামের ছোট অনেক বাচ্চা জড়ো করত। তাদের জন্য ডামি বন্দুক বানিয়ে দিয়েছিল। সেই বন্দুক হাতে তাদের প্যারেড করাত। প্রত্যেকের জন্য খাবার কিনে নিয়ে যেত। রাসেলের খুদে বাহিনীর জন্য জামা-কাপড় ঢাকা থেকেই কিনে নিয়ে যাওয়া হতো। মাছ ধরা খুব পছন্দ করত। কিন্তু মাছ ধরে আবার ছেড়ে দিত। রাসেল একটু একটু করে বড় হয়ে ওঠে। মা ও আব্বার দেওয়া নাম রাসেল। স্কুলে নাম ছিল শেখ রিসাল উদ্দীন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বারট্রান্ড রাসেলের খুব ভক্ত ছিলেন। রাসেলের বই পড়ে তিনি তার ছায়াসঙ্গী প্রিয়তমা স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা রেণুকে বাংলায় ব্যাখ্যা করে শোনাতেন। এই দার্শনিকের কথা শুনে শুনে বঙ্গমাতা এতটাই বারট্রান্ড রাসেলের ভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন যে তার নাম অনুসারে নিজের ছোট ছেলে জন্মের পর তার নাম রাখলেন রাসেল।’

রাসেল মানুষকে খুব ভালবাসতে পারতেন। আমরা একজন হৃদয়বান মানুষকে হারিয়েছি আমরা। যে শিশুর চোখে ছিলো তারার আলো, ছিলো অপার সম্ভাবনা, উদয়ের আগেই আমরা সেই নক্ষত্রকে হারিয়েছি। বাংলার পথে প্রান্তওে কত ইতিহাস ছড়ানো ছিটানো। ক্ষমতার অলি-গলিতে কত যে ষড়যন্ত্র কত যে রক্তাক্ত ঘটনা। যে জাতি বিশ্বে বীরের জাতি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলো, সেই জাতি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিশ্বজুড়ে মানুষ হিসেবে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও বিশ^স্ততা হারায়। বিদেশীরা মনে করতো যে বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যে কোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে, সাহসী বাঙালিরা নিজেদেরকে একটি কাপুরুষ-আত্মঘাতী জাতি হিসেবে এবং বিশ্বাসঘাতক হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়। বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মাধ্যমে বাঙালি জাতি তার আত্মঘাতী চরিত্র বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার চেতনাকে নির্বাসন দেওয়া হয়েছিলো। যে মানুষ তাঁর সারা জীবনকে সঁপেছেন দেশের জন্য, মানুষের মুক্তির জন্য, সেই মানুষটাকে তো হত্যা করেছেই, তার পরিবারকেও ছাড় দেয়নি ঘাতকরা। বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শেখ রাসেল, যার বয়স ছিল তখন মাত্র ১০ বছর ১১ মাস, খুনিরা তাকেও রেহাই দেয়নি।

বঙ্গবন্ধুহত্যা মামলার বাদী পিএ মুহিতুল ইসলামের বর্ণনায়- ‘ঘাতকদের অভিযানের শেষ শিকার ছিল শিশু রাসেল। সবাইকে হত্যার পর তাকে নিচে নিয়ে আসা হয়। এ সময় রাসেল আমাকে জড়িয়ে ধরে জানতে চায়, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে? এর কিছুক্ষণের মধ্যেই এক ঘাতক আমাকে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করে রাসেলকে পুলিশ বক্সের ভেতরে আটকায়। এরপর দুই ঘাতক রাসেলকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দোতলায় নিয়ে যায় এবং কিছুক্ষণ পর গুলির শব্দ শুনতে পাই’।

আমরা একজন সূর্য সন্তানকে হারিয়েছি, মানুষকে ভালবাসতে পারে এমন একজন হৃদয়বান মানুষকে হারিয়েছি। আর যেন কোনো শিশুর ভাগ্যে এমন ঘটনা না ঘটে সেটাই আমাদের কাম্য। সেজন্য প্রত্যেক শিশুর নিরাপদ বাসযোগ্য দেশ গড়ে তুলতে হবে। রাসেল অকালেই ঝরে গেছে। ফুল ফোটার আগেই ঘাতকের আঘাতে তার জীবন প্রদীপ নিভে গেছে। তা আর প্রস্ফুটিত হতে পারেনি। শেখ রাসেল ছিলেন একজন নিষ্পাপ শিশু। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে মন মানসিকতায় আমাদের সকলকেই এমন নিষ্পাপ চিন্তার অধিকারী হতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর অবদান, শেখ রাসেলের অনুভূতি ও শেখ হাসিনার কর্মকান্ডগুলোকে ছড়িয়ে দিতে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করতে পারবো।

লেখকঃ প্রাবন্ধিক ও গবেষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

slot qris

slot bet 100 rupiah

slot spaceman

mahjong ways

spaceman slot

slot olympus slot deposit 10 ribu slot bet 100 rupiah scatter pink slot deposit pulsa slot gacor slot princess slot server thailand super gacor slot server thailand slot depo 10k slot777 online slot bet 100 rupiah deposit 25 bonus 25 slot joker123 situs slot gacor slot deposit qris slot joker123 mahjong scatter hitam

sicbo

roulette

pusathoki slot

orbit4d slot

pusatmenang slot

https://www.firstwokchinesefood.com/

orbit4d

https://www.mycolonialcafe.com/

https://www.chicagotattooremovalexpert.com/

fokuswin

slot bet 200

pusatmenang

pusatplay

https://partnersfoods.com/

https://www.tica2023.com/

https://dronesafeespana.com/

https://mrzrestaurants.com/

slot server luar