Togel Online

Situs Bandar

Situs Togel Terpercaya

Togel Online Hadiah 4D 10 Juta

Bandar Togel

নদী সুরক্ষা ছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য সম্ভব নয়


হীরেন পণ্ডিত: পরিবেশ বাঁচলে দেশ বাঁচবে, দেশ বাঁচলে আমরা বাঁচব। আমাদের অসচেতনতার কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। জীবনধারণের স্থান সংকুচিত হচ্ছে। তাই আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হতে হবে।
পরিবেশ রক্ষায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই সচেতন না হলে শুধু আইন প্রয়োগে খুব বেশি সফলতা আসবে না। পরিবেশকে বিবেচনায় না রেখে একটি সুন্দর পৃথিবীর অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। পরিবেশ আর উন্নয়নের মধ্যকার সম্পর্ক পরস্পরবিরোধী নয়।
উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশের রয়েছে এক নিবিড় সম্পর্ক। পরিবেশকে রক্ষা করে দেশের উন্নয়ন না করলে তা টেকসই হবে না। এ জন্য শুধু সরকার বা বিভিন্ন সংস্থাকে কাজ করলে চলবে না, সমাজের প্রত্যেক মানুষকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। পরিবেশ বাঁচিয়েই অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সম্ভব করতে হবে।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সংরক্ষণ করে যে উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যায় তাকে টেকসই উন্নয়ন হিসেবে গণ্য করা হয়। সরকার এ জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বাংলাদেশ অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে এমডিজি বাস্তবায়ন করেছে। বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (২০১৫-২০৩০) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

টেকসই উন্নয়নে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। গবেষণায় জানা যায়, ২০০৯ সালে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহৃত হয়েছে ৬৮ বিলিয়ন টন। ২০৫০ সালে ব্যবহৃত হবে ১৪০ বিলিয়ন টন, যা পৃথিবীর ভারসাম্য নষ্ট করবে। মানুষের কারণে ২০ শতাংশ চাষযোগ্য জমি, ৩০ শতাংশ বনভূমি এবং ১০ শতাংশ চারণভূমি হারিয়ে গেছে। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ শতাংশ কৃষিজমি কমছে। জীববৈচিত্র্য বিলুপ্ত হচ্ছে। অর্ধেকেরও বেশি নদী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাকিগুলো দখলে বিপর্যস্ত।

টেকসই উন্নয়নের জন্য যে অর্থনীতি আমাদের প্রয়োজন, সেই অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে নদীকে তার হারানো গৌরব ও স্রোত ফিরিয়ে দিতে হবে। নদী আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। টেকসই উন্নয়ন ও নদী রক্ষায় সবাইকে নিয়েই সামনে এগোতে হবে। নদীর ব্যবহার এখন বহুমাত্রিক। মানুষ বুঝে, না বুঝে নদীকে ব্যবহার করছে। নদীর কাছেই গড়ে উঠেছে বড় বড় কলকারখানা, নদীতে এখন হাজার হাজার লঞ্চ-স্টিমার। নদীতে শত শত বাঁধ। যখন যেভাবে প্রয়োজন তখন সেভাবেই নদীকে ব্যবহার করা হচ্ছে।

পৃথিবীতে এখন প্রায় ৭৮ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারে না। আর আড়াই শ কোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। বছরে ৬০-৮০ লাখ মানুষ পানিবাহিত অসুখে মারা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পানির সহজলভ্যতা কমছে দিন দিন। যদিও বিশ্বে ২০৫০ সাল নাগাদ শুধু কৃষিকাজে ব্যবহৃত পানির পরিমাণ ১৯ শতাংশ বাড়তে পারে। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন কিংবা নীতিগত মধ্যস্থতা না হলে এটা আরো বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে নদীগুলো ঘন ঘন গতিপথ পরিবর্তন করে। ফলে বাংলাদেশে চর জেগে ওঠা জমি একটি সাধারণ দৃশ্যে পরিণত হয়েছে এবং চাষযোগ্য জমি ক্রমেই কমছে। সারা বাংলাদেশে ৩২টি জেলায় প্রায় ১০৯টি চর উপজেলা রয়েছে। ছোট এই দেশের মধ্য দিয়ে ছোট-বড় সাত শর মতো নদী বয়ে গেছে। মানুষের পেশা, জীবনযাপন এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি—সব কিছুই নদীর ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নির্ভরশীল। আমাদের দেশে নদীর কাছে যে জমি চাষ করা হয় তাতে ব্যবহার করা হয় নদীর পানি। উৎপাদিত ফসল শহরে নিয়ে যাওয়া হয় নদীপথে। নদী আমাদের সমাজজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জাতীয় জীবন অর্থনীতির চালিকাশক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম উপাদান হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। নদীর গুরুত্ব বোঝাটা তাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রত্যাশিত বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা বাড়বে ৫০ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে হবে ৭০ শতাংশ, যেখানে হাইড্রো পাওয়ার এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্পদসহ মোট জ্বালানি চাহিদা বাড়বে ৬০ শতাংশ। বর্ধিত কৃষি উৎপাদনের জন্য বিপুলভাবে পানি ও জ্বালানি চাহিদা উভয়ই পানি ব্যবহৃত ক্ষেত্রগুলোয় প্রতিযোগিতা বাড়বে।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে মুক্তির জন্য আঞ্চলিক অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম। তার জন্য ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে সমঝোতা রয়েছে তার ভিত্তিতেই আমাদের নদী ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোতে হবে। নদী ও পরিবেশ রক্ষা করে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করতে হবে। নদী রক্ষায় ১৯৯৯ সালের পানি নীতি এবং ২০১৩ সালের ওয়াটার অ্যাক্ট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নদী সমস্যার সমাধান করা জরুরি। তার জন্য সবার আগে যেকোনো পরিকল্পনার সঙ্গে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পৃক্ত করে কাজ করতে হবে।

নদী দখল, নদীদূষণের জন্য দায়ী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে নদীকে রক্ষা করতে হবে। বালু উত্তোলন ও বর্জ্য ফেলা নিয়ন্ত্রণ করে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এগোতে পারলে আমরা অবশ্যই নদীকে বাঁচাতে পারব। আর এসবের জন্য রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রজন্মের ঐক্যের মধ্য দিয়ে নদী রক্ষা করতে হবে। জলবায়ুর অভিঘাত থেকে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হবে।

করোনা সংকটের মতোই বন্যা ও নদীভাঙন দেশবাসীর জন্য মহাসংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলাবদ্ধতা আজ মানুষের জন্য একটি অন্যতম সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এসবের জন্য নাব্যতা নিশ্চিত করে নদীকে রক্ষা করতে হবে। নদীর উপকারভোগী আমরা সবাই, তবে সরাসরি কিছু অংশীজন রয়েছে যারা একইভাবে নদীকে শোষণ করছে বেশি। যেমন—কিছু ফ্যাক্টরি বা কারখানা, হাসপাতাল, লঞ্চ-স্টিমার ব্যবসায়ী ও দখলদার গোষ্ঠী। এমন চলতে থাকলে পানি কৃষিকাজে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাবে। আর একই সঙ্গে ছড়াবে নানা রকমের রোগ-বালাই। পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে দিন দিন। দেশে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে নদী দখল, নদীদূষণ বন্ধ করতে হবে। মুনাফালোভী ও নদীখেকো দখলদারদের কারণে দেশের নদ-নদীগুলো ধ্বংসের মুখে রয়েছে, তাদের কাছ থেকে নদীকে রক্ষা করতে হবে। অপরিকল্পিত উন্নয়নের কাছে নদী তার চিরচেনা রূপ হারাতে বসেছে। টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে এ অবস্থায় প্রধান করণীয় হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার মতো নতুন কৌশল উদ্ভাবন এবং সেগুলো প্রয়োগ করা।

মানুষের দুর্ভোগ কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। লবণাক্ত পানির প্রকোপ থেকে ফসলি জমি যতটুকু পারা যায় রক্ষা করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। খরা, নদীভাঙন ইত্যাদি দুর্যোগে অধিক সংখ্যায় মানুষ যাতে বাস্তুচ্যুত না হয় এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। জলবায়ু সহনশীল কৃষি পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হবে।

নদী রক্ষায় নানা সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিমূলক কাজ করে এই কমিটি। কিন্তু শুধু জেলা প্রশাসন অথবা পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী বাঁচাতে পারবে না। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি সরকারকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পগুলোর কাজের গতি ত্বরান্বিত করতে হবে। তেমনি এসব কাজের জবাবদিহি বাড়াতে হবে।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও রিসার্চ ফেলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

slot qris

slot bet 100 rupiah

slot spaceman

mahjong ways

spaceman slot

situs togel

aplikasi togel

togel online sydney