সবার জন্য ডিজিটাল সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি


হীরেন পণ্ডিত

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশের যে ভিত্তি তৈরি করে গেছেন, সে পথ ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন। এক যুগের বেশি পথচলায় প্রমাণিত হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনার এক উন্নয়ন দর্শন।

এখন স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১ বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি এবং উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠায় স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১ ভিশনে নেতৃত্ব হিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১ বিনির্মাণের লক্ষ্যে নির্মাণে ৪টি স্তম্ভের আলোকে, স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সোসাইটি এবং স্মার্ট গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ চলছে।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) প্রকাশিত সর্বশেষ ইন্টারনেট সংযোগের হিসাব থেকে এমন তথ্য পাওয়া যায় মোবাইল ব্যবহারকারী ২৮ কোটি ৬০ লাখ। প্রতিবেদন অনুযায়ী মোট ইন্টারনেট গ্রাহক ১৩ কোটি ২৭ লাখ ১৩ হাজার। এর মধ্যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১২ কোটি ৩০ লাখ ৯১ হাজার। আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সংখ্যা পৌঁছেছে ৯৮ লাখ ২২ হাজারের মতো। বৈষম্য আমাদের কাছে স্বাভাবিকভাবেই পরিচিত একটি শব্দ। আর্থিক বৈষম্য, সামাজিক বৈষম্য বা রাজনৈতিক বৈষম্য শব্দগুলো আমরা প্রতিনিয়ত শুনে থাকি। প্রযুক্তির চরম উন্নতির এই যুগে আমরা নতুন এক বৈষম্য দেখতে পাচ্ছি আর তা হলো ডিজিটাল বৈষম্য। প্রযুক্তি অগণিত মানুষের জীবনকে বদলে দিয়েছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে বহু মানুষ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, সেটিও মেনে নিতে হবে।

এই করোনাকালেবিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। ব্যক্তিগত ও আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বহু দেশ তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম অনলাইনভিত্তিক করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা অফিস-আদালত সব ক্ষেত্রেই বিকল্প হিসেবে প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হয়েছে। ডিজিটাল বৈষম্যের আলোচনা এখন তাই ব্যাপকভাবে হচ্ছে। বিশে^ বহু মানুষ আছেন, যারা প্রযুক্তির নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের জন্য অনলাইন ক্লাস, অফিস প্রভৃতি একটি বিভীষিকার নাম। ডিজিটাল বৈষম্য একটি বৈশ্বিক সমস্যা। উন্নতবিশ্বের বহু দেশ এ সমস্যায় ভুগছে। আমেরিকা ও ইউরোপেও দেখা যায়, বহু মানুষ প্রযুক্তি সুবিধার ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আছে। আবার এর সঙ্গে নানা সামাজিক শ্রেণিবিভাজনও যুক্ত হয়ে যায়। অঞ্চল, লিঙ্গ, আর্থসামাজিক অবস্থাও ডিজিটাল বৈষম্যের সঙ্গে জড়িত থাকে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবস্থা যে আরও খারাপ, তা সহজেই বোঝা যায়। ডিজিটাল প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইন্টারনেট সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করার পাশাপাশি সবচেয়ে কম মূল্যে স্মার্টফোন সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকারি সূত্র। ইতোমধ্যেই ইন্টারনেটের ‘একদেশ একরেট চালু’ হয়েছে। দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোন ইতোমধ্যেই শতকরা ৯৬ ভাগ চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা অর্জন করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য লাগসই ডিজিটাল সংযোগ ও ডিজিটাল ডিভাইস অপরিহার্য। ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন শ্বাসপ্রশ্বাসের মতো। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় ইন্টারনেট এখন মানুষের জীবনধারায় অনিবার্য একটি বিষয় হিসেবে জড়িয়ে আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি হচ্ছে ইন্টারনেট। কাউকে এ থেকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়। শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা থেকেই ইতোমধ্যেই প্রাথমিক স্তরে বই ছাড়া ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে লেখা পড়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের সুযোগ না দিলে আগামী পৃথিবীতে তারা টিকে থাকার জন্য অযোগ্য হয়ে পড়বে। ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ার পাশাপাশি মানুষ ইন্টারনেটের উচ্চগতিও এখন প্রত্যাশা। ২০০৬ সালে দেশে প্রতি এমবিপিএস ইন্টানেটের দাম ছিল ৭৮ হাজার টাকা, ২০০৮ সালে তা ২৭ হাজার টাকা এবং বর্তমানে তা ৬০ টাকায় নির্ধারিত হয়েছে। সে সময় দেশে মাত্র সাড়ে সাত জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হতো তা বেড়ে বর্তমানে ৩৮শ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূল ধারায় নিয়ে আসতে ডিজিটাল ইনক্লুশন ফর ভারনারেবল এক্সেপশন উদ্যোগের আওতায় আত্মকর্ম সংস্থানভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প-২০২১ আজ বাস্তবতা। এই ধারাবাহিকতায় জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কাজ করছে, লক্ষ্য এখন ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ। এখন এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে ইন্টারনেট প্রযুক্তির প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। ইন্টারনেট প্রযুক্তি দেশে নতুন অর্থনীতির সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কৃষক-শ্রমিক, প্রবাসী এবং গার্মেন্টসের কর্মীরাই দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাড়ে ছয় লাখের মতো ফ্রিল্যান্সার আইটি তরুণ-তরুণী। ইন্টারনেটকে অনেক দেশ মৌলিক অধিকার হিসেবে মেনে নিয়েছে আমাদের সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার। আমরা অনেকেই নানাভাবে শুনেছি করোনাকালে বহু ছাত্রছাত্রীকে বাড়ি থেকে বহু দূরে গিয়ে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে হয়েছে, আবার গাছের ওপরে উঠেও বহু মানুষকে ক্লাস করতে হয়েছে। এগুলো ডিজিটাল বৈষম্যের কারণে তৈরি হওয়া সমস্যাগুলোর প্রতিফলন মাত্র। ডিজিটাল বৈষম্যের আরও বহু খারাপ দিক হয়তো সামনে আমরা দেখতে পাব। আমরা যদি এখনকার বড় বড় ব্যবসায় মাধ্যমগুলো দেখি, তাহলে দেখা যাবে সেগুলোর ভালো একটা অংশ অনলাইননির্ভর হয়ে গেছে। গুগল, অ্যামাজন, আলিবাবা, ফেসবুক প্রভৃতির কথা আমরা সবাই জানি। এসব কোম্পানি বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছে অনলাইনের ওপর নির্ভর করেই। আমাদের দেশেও অনলাইননির্ভর কেনাকাটা শুরু হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে বহু মানুষই এই শতকে এগিয়ে যাবে। তবে বহু মানুষ আছে, যারা প্রযুক্তি সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবে। এতে নানা অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পাবে, এতে সন্দেহ নেই।

ডিজিটাল বৈষম্য দূর করার পদক্ষেপ অবশ্যই নিতে হবে। একটা ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে। ইন্টারনেট সহজলভ্য করা, প্রযুক্তি সম্পর্কিত অবকাঠামোর উন্নয়ন করা, মানুষকে প্রযুক্তি-সাক্ষর হিসেবে গড়ে তোলার মতো পদক্ষেপগুলো ডিজিটাল বৈষম্য রোধে ভালো ভূমিকা রাখবে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যেমন দারিদ্র্য বিমোচনের সহায়ক, একই সঙ্গে তা সুশাসন, গুণগত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিতের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায্যতা তৈরিতে ভূমিকা রাখে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালায় তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে অন্যতম কৌশল হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তিতে সামাজিক সমতা ও সর্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে- যাতে অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন এমন ব্যক্তিদের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যম সমাজের মূলস্রোতে নিয়ে আসা। তবে ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের ক্ষেত্রেই বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও সবার সামনে আসছে। মূলত দরিদ্র ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী, যারা গ্রাম অঞ্চলে বসবাস করে, যাদের প্রয়োজনীয় ডিজিটাল ডিভাইস বা সংযোগ নেই বা সেবা গ্রহণ করার জন্য যাদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও দক্ষতা নেই, তারা এই সেবা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে বা ক্রমাগত পিছিয়ে পড়েছে। বর্তমানে দেশের ৫৫ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা নেই। পাশাপাশি গ্রামীণ পরিবারগুলোর ৫৯ শতাংশের স্মার্টফোন নেই এবং ৪৯ শতাংশের কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ নেই। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সেবা গ্রহণে যেমন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ একই সঙ্গে সেবাগুলোর সহজীকরণ ও তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতাও প্রয়োজনীয়। এ দুই ক্ষেত্রেই দরিদ্র ও নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর ঘাটতি রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির প্রবেশগম্যতা নিয়ে একটা ধারণা পাওয়া যায়। কিন্তু সম্পূর্ণ ধারণা এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ পরিবারের মধ্যকার যে বিভাজন আছে, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামনে উঠে আসে না। যেমন পরিবারের নারী ও পুরুষের মধ্যকার বিভাজন যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে বয়সভেদে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান।
বর্তমান সময়ে তথ্য ও প্রযুক্তিতে অংশগ্রহণ যেকোনো জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা ও ক্ষমতায়নের বহিঃপ্রকাশ। তথ্যপ্রযুক্তি শুধু যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, একই সঙ্গে তা নতুন নতুন ক্ষেত্র ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। করোনাকালে এর কিছু প্রয়োগ আমরা দেখতে পেয়েছি, যদিও তা সার্বিকভাবে ও সামগ্রিকভাবে নয়। তথ্যপ্রযুক্তিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেই অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বোঝা। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রেই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নানা সুযোগ সৃষ্টি না করাও একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।

প্রযুক্তি ক্ষেত্রেই অসমতা দেশের জনগণের মধ্যকার বর্তমান অসমতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। এমনিতেই আমাদের শ্রেণিবিভক্ত সমাজে সরকারি ও বেসরকারি সেবায় সবার সমান সুযোগ না পাওয়া একটি কঠিন বাস্তবতা। সরকার প্রণীত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালায় ‘সামাজিক সমতা ও সর্বজনীন প্রবেশাধিকার’ অংশে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। এখন এই নীতিমালা বাস্তবায়ন করা জরুরি এবং এজন্য সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সবার আগে তথ্যপ্রযুক্তিকে সব জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে। এজন্য সরকারি উদ্যোগে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে হবে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্যোগী করে তুলতে হবে। পাশাপাশি কম খরচে বিশেষত দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও নারীরা যাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে তার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
সরকারের পরবর্তী ভিশন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১’ বাস্তবায়নে ১৪টি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ ২০২১ রূপকল্পের আওতায় যেমন ডিজিটাল শিক্ষা, ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা, ডিজিটাল কৃষি ইত্যাদির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হয়েছে তেমনি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১’-এর আওতায় প্রধান অঙ্গ হবে স্মার্ট শিক্ষা, স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা, স্মার্ট কৃষি, স্মার্ট বাণিজ্য, স্মার্ট পরিবহন ইত্যাদি।

তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে সরকার ২০২১ সালে দেশে ৫জি ইন্টারনেট সেবা চালু এবং একই বছর হাওর-বিল-চর ও পার্বত্য অঞ্চলে ক্যাবল বা স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে। ২০২৩ সালে সংযুক্ত হবে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল। মূলত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিস্তার ঘটছে ইন্টারনেটের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংযোগের মাধ্যমে। সংশ্লিষ্টদের মতে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা তার পরবর্তী সময়কে দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করতে ডিজিটাল সংযুক্তির জন্য যতটুকু প্রস্তুতির প্রয়োজন, সরকার তার অধিকাংশই সুসম্পন্ন করেছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে শিল্পের বিকাশ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীবাহিনী সৃষ্টি এবং পরিবেশ সংরক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার ধীরে ধীরে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসসি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে সে লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা এবং গবেষণা খাতে আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের দেওয়া রাজস্ব থেকে আপনাদের ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। যারা ফেলোশিপ পাচ্ছেন, সর্বোচ্চ দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করতে হবে। কারণ আমরা চাই দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তুলতে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবন, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *