নারীদের বিজ্ঞানে উৎকর্ষ লাভ করতে হবে


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী ও মেয়েদের বিজ্ঞানে উৎকর্ষ লাভের সুযোগ দিতে সবার মানসিকতা পরিবর্তনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন এবং নিজেদের পরিবর্তনের লক্ষ্যে এজেন্ট হিসাবে কাজ করার জন্য নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এটি দুর্ভাগ্যজনক যে, নারীরা বিশ্বব্যাপী মাত্র ১২ ভাগ বিজ্ঞানী এবং ৩০ ভাগ গবেষকের প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের অবশ্যই মানসিকতা এবং শিক্ষার পরিবেশের প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে, যাতে আরও বেশিসংখ্যক নারী ও মেয়েরা বিজ্ঞানে উৎকর্ষ লাভ করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ৮ম নারী ও মেয়েদের দিবস বিজ্ঞান সমাবেশে এক ভিডিও বিবৃতিতে নারী ও মেয়েদের নিজেদের বদলে দেওয়ার এজেন্ট হিসাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নিয়োজিত নারী ও মেয়েদের মনে রাখতে হবে যে, তারা একা নন। তারা যে পদক্ষেপগুলো নেন তা বিশ্বজুড়ে তাদের বোনদের জন্য আরও দ্বার উন্মুক্ত করতে সাহায্য করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা নারী ও মেয়েদের নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। তিনি বলেন, ‘আমাদের নারীরা গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে খুব ভালো করছে। কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তিসহ সব ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য মেয়েদের বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, মেয়েদের উৎসাহিত করার জন্য তার সরকার সারা দেশে ৫,২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখান থেকে একজন মেয়ে এবং একজন ছেলে উদ্যোক্তা ২০০ ধরনের সেবা প্রদান করছে।
২০১৫ সালে জাতিসংঘে গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী বিজ্ঞানে নারী ও মেয়েদের আন্তর্জাতিক দিবস শুরু হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল বিজ্ঞানে নারীদের অবদান এবং কৃতিত্ব উদযাপনের মাধ্যমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত (এসটিইএম) ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের ব্যবধান দূর করা। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা সেই নারী ও মেয়েদের সাফল্যগুলো উদ্যাপন করি, যারা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’
সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশি ছেলেমেয়েদের জন্য সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে তারা দেশব্যাপী বেশ কিছু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। তিনি বলেন, হাই-টেক পার্কগুলো একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করেছে যেখানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও উন্নতি করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই যে, আমাদের নারী ও মেয়েরা বিজ্ঞানে উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতার সম্ভাবনা পূরণ করছে। আমাদের অবশ্যই উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তাদের জন্য বিদ্যমান সুযোগ লাভের বাধা দূর করতে হবে। আমরা চাই আমাদের মেয়েরা স্মার্ট, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে পূর্ণ সুযোগ পাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *