টেকসই উন্নয়নে নদীর গুরুত্ব

হীরেন পণ্ডিত

টেকসই উন্নয়নের জন্য যে অর্থনীতি আমাদের প্রয়োজন সেই অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে নদীকে তার হারানো গৌরব ও যৌবন ফিরিয়ে দিতে হবে। নদী আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। নদীর ব্যবহার বহুমাত্রিক। নদীর কাছেই গড়ে উঠেছে বড় বড় কলকারখানা, নদীতে এখন হাজার হাজার লঞ্চ-স্টিমার। যখন যেভাবে যার প্রয়োজন, তখন সেভাবেই নদীকে তারা ব্যবহার করছে।

বিশ্বে এখন প্রায় ৭৮ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারে না। আর আড়াইশ কোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নেই। বছরে ৬০-৮০ লাখ মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পানির সহজলভ্যতা কমছে দিন দিন। বিশ্বে ২০৫০ সাল নাগাদ শুধু কৃষি কাজেই ব্যবহূত পানির পরিমাণ ১৯ শতাংশ বাড়তে পারে। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন কিংবা নীতিগত মধ্যস্থতা না হলে তা আরও বাড়তে পারে।

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ছোট এই দেশের মধ্য দিয়ে ছোট-বড় সাতশর মতো নদী বয়ে গেছে। মানুষের জীবন-জীবিকা এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি সবকিছুই নদীর ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। আমাদের দেশে নদীর কাছে যে জমি চাষ করা হয়, তাতে ব্যবহার করা হয় নদীর পানি। উৎপাদিত ফসল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শহরে নিয়ে যাওয়া হয় নদীপথে। নদী আমাদের সমাজ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জাতীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম উপাদান হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। নদীর গুরুত্ব বোঝা তাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা বাড়বে ৫০ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে হবে ৭০ শতাংশ, যেখানে হাইড্রো পাওয়ার এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্পদসহ মোট জ্বালানি চাহিদা বাড়বে ৬০ ভাগ। বর্ধিত কৃষি উৎপাদনের জন্য বিপুলভাবে পানি ও জ্বালানি চাহিদা উভয়ই পানি ব্যবহূত ক্ষেত্রগুলোয় প্রতিযোগিতা বাড়বে। অর্থনীতি সচল রেখেই পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। আবার পরিবেশের জন্য অর্থনীতিও সচল রাখতে হবে। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার স্বার্থেই নদীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু প্রকৃতির অপার দান নদীকে আমরা রক্ষা করতে পারছি না। পরিবেশ একা রক্ষা করা যায় না। সবাইকে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। অর্থনীতি সচল রেখে যেমন আমাদের কাজ করতে হবে, তেমনি পরিবেশও রক্ষা করতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষার জন্য আঞ্চলিক অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম। তার জন্য ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে সমঝোতা রয়েছে, তার ভিত্তিতেই নদী ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোতে হবে। নদী ও পরিবেশ রক্ষা করে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করতে হবে। নদী রক্ষায় ১৯৯৯ সালের পানি নীতি এবং ২০১৩ সালের ওয়াটার অ্যাক্ট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নদী সমস্যার সমাধান করা জরুরি। তার জন্য সবার আগে যে কোনো পরিকল্পনার সঙ্গে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পৃক্ত করাও প্রয়োজন। জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব আমরা লক্ষ্য করেছি। জলবায়ুর অভিঘাত পানির ওপরে পড়ে এবং পানির সঙ্গে আমাদের কৃষি ও পরিবেশসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও পড়ে। তাই নদীর প্রবাহ অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ করতে হবে। অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীকে গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি চীনের সাঙ্গু থেকে যমুনার যে প্রবাহ, এ বিষয়েও কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।

নদী দখল, নদীদূষণের জন্য দায়ী আমাদের দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার নদী দখলকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বালু উত্তোলন ও বর্জ্য ফেলা নিয়ন্ত্রণ করে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এগোতে পারলে আমরা অবশ্যই নদী বাঁচাতে পারব। আর এসবের জন্য রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রজন্মের ঐক্যের মধ্য দিয়ে নদী রক্ষা করতে হবে। বন্যা ও নদীভাঙন দেশবাসীর জন্য মহাসংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলাবদ্ধতা মানুষের জন্য একটি অন্যতম সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এসবের জন্য নদীর নাব্য নিশ্চিত করে নদীকে রক্ষা করতে হবে। নদীর উপকারভোগী আমরা সবাই, তবে সরাসরি কিছু অংশীজন রয়েছে, যারা একইভাবে নদীকে শোষণ করছেন বেশি। এমন চলতে থাকলে পানি কৃষি কাজে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাবে। আর একই সঙ্গে ছড়াবে নানা রকমের রোগ-বালাই। নদীদূষণের ফলে ইতোমধ্যে মাছের নানারকম রোগ দেখা দিচ্ছে, যা আমাদের মানব শরীরের জন্যও ক্ষতিকর। পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে দিন দিন। মুনাফালোভী ও নদীখেকো দখলদারদের কারণে দেশের নদ-নদীগুলো ধ্বংসের মুখে তাদের বিরুদ্ধে নির্মোহ ব্যবস্থা নিতে হবে। অপরিকল্পিত উন্নয়নের কাছে নদী তার চিরচেনা রূপ হারাতে বসেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের আন্তঃনদী মোট ৫৭টি। এর মধ্যে ৫৪টি নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছে। টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে এ অবস্থায় প্রধান করণীয় হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার মতো নতুন কৌশল উদ্ভাবন এবং তা প্রয়োগ করা।

মানুষের দুর্ভোগ কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া লবণাক্ত পানির প্রকোপ থেকে ফসলি জমি যতটুকু পারা যায় রক্ষা করা। খরা, নদীভাঙন ইত্যাদি দুর্যোগে মানুষ যাতে বাস্তুচ্যুত না হয়, এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া ও একই সঙ্গে জরুরি জলবায়ু সহনশীল কৃষি পদ্ধতি উদ্ভাবন করা। প্রতিটি জেলায় নদী রক্ষা কমিটি রয়েছে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে। নদী ভরাট ও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি নদী খননের প্রশাসনিক কার্যাদি সম্পাদন ও নদী রক্ষায় নানা সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিমূলক কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করাও দরকার। কিন্তু শুধু জেলা প্রশাসন অথবা পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী বাঁচাতে পারবে না। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি সরকারকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পগুলোর কাজের গতি ত্বরান্বিত করতে হবে। সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীল সবার জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করতে হবে।

হীরেন পণ্ডিত, রিসার্চ ফেলো, বিএনএনআরসি

টেকসই উন্নয়নে নদীর গুরুত্ব

হীরেন পণ্ডিত
টেকসই উন্নয়নের জন্য যে অর্থনীতি আমাদের প্রয়োজন সেই অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে নদীকে তার হারানো গৌরব ও যৌবন ফিরিয়ে দিতে হবে। নদী আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। নদীর ব্যবহার বহুমাত্রিক। নদীর কাছেই গড়ে উঠেছে বড় বড় কলকারখানা, নদীতে এখন হাজার হাজার লঞ্চ-স্টিমার। যখন যেভাবে যার প্রয়োজন, তখন সেভাবেই নদীকে তারা ব্যবহার করছে।
বিশ্বে এখন প্রায় ৭৮ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারে না। আর আড়াইশ কোটি মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নেই। বছরে ৬০-৮০ লাখ মানুষ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পানির সহজলভ্যতা কমছে দিন দিন। বিশ্বে ২০৫০ সাল নাগাদ শুধু কৃষি কাজেই ব্যবহূত পানির পরিমাণ ১৯ শতাংশ বাড়তে পারে। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন কিংবা নীতিগত মধ্যস্থতা না হলে তা আরও বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। ছোট এই দেশের মধ্য দিয়ে ছোট-বড় সাতশর মতো নদী বয়ে গেছে। মানুষের জীবন-জীবিকা এবং সাহিত্য-সংস্কৃতি সবকিছুই নদীর ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। আমাদের দেশে নদীর কাছে যে জমি চাষ করা হয়, তাতে ব্যবহার করা হয় নদীর পানি। উৎপাদিত ফসল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শহরে নিয়ে যাওয়া হয় নদীপথে। নদী আমাদের সমাজ জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জাতীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম উপাদান হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। নদীর গুরুত্ব বোঝা তাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা বাড়বে ৫০ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে হবে ৭০ শতাংশ, যেখানে হাইড্রো পাওয়ার এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্পদসহ মোট জ্বালানি চাহিদা বাড়বে ৬০ ভাগ। বর্ধিত কৃষি উৎপাদনের জন্য বিপুলভাবে পানি ও জ্বালানি চাহিদা উভয়ই পানি ব্যবহূত ক্ষেত্রগুলোয় প্রতিযোগিতা বাড়বে। অর্থনীতি সচল রেখেই পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। আবার পরিবেশের জন্য অর্থনীতিও সচল রাখতে হবে। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার স্বার্থেই নদীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু প্রকৃতির অপার দান নদীকে আমরা রক্ষা করতে পারছি না। পরিবেশ একা রক্ষা করা যায় না। সবাইকে নদী ও পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। অর্থনীতি সচল রেখে যেমন আমাদের কাজ করতে হবে, তেমনি পরিবেশও রক্ষা করতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষার জন্য আঞ্চলিক অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অপরিসীম। তার জন্য ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে সমঝোতা রয়েছে, তার ভিত্তিতেই নদী ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোতে হবে। নদী ও পরিবেশ রক্ষা করে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করতে হবে। নদী রক্ষায় ১৯৯৯ সালের পানি নীতি এবং ২০১৩ সালের ওয়াটার অ্যাক্ট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নদী সমস্যার সমাধান করা জরুরি। তার জন্য সবার আগে যে কোনো পরিকল্পনার সঙ্গে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পৃক্ত করাও প্রয়োজন। জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব আমরা লক্ষ্য করেছি। জলবায়ুর অভিঘাত পানির ওপরে পড়ে এবং পানির সঙ্গে আমাদের কৃষি ও পরিবেশসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও পড়ে। তাই নদীর প্রবাহ অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ করতে হবে। অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনায় গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীকে গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি চীনের সাঙ্গু থেকে যমুনার যে প্রবাহ, এ বিষয়েও কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।

নদী দখল, নদীদূষণের জন্য দায়ী আমাদের দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার নদী দখলকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বালু উত্তোলন ও বর্জ্য ফেলা নিয়ন্ত্রণ করে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এগোতে পারলে আমরা অবশ্যই নদী বাঁচাতে পারব। আর এসবের জন্য রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রজন্মের ঐক্যের মধ্য দিয়ে নদী রক্ষা করতে হবে। বন্যা ও নদীভাঙন দেশবাসীর জন্য মহাসংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলাবদ্ধতা মানুষের জন্য একটি অন্যতম সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এসবের জন্য নদীর নাব্য নিশ্চিত করে নদীকে রক্ষা করতে হবে। নদীর উপকারভোগী আমরা সবাই, তবে সরাসরি কিছু অংশীজন রয়েছে, যারা একইভাবে নদীকে শোষণ করছেন বেশি। এমন চলতে থাকলে পানি কৃষি কাজে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাবে। আর একই সঙ্গে ছড়াবে নানা রকমের রোগ-বালাই। নদীদূষণের ফলে ইতোমধ্যে মাছের নানারকম রোগ দেখা দিচ্ছে, যা আমাদের মানব শরীরের জন্যও ক্ষতিকর। পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে দিন দিন। মুনাফালোভী ও নদীখেকো দখলদারদের কারণে দেশের নদ-নদীগুলো ধ্বংসের মুখে তাদের বিরুদ্ধে নির্মোহ ব্যবস্থা নিতে হবে। অপরিকল্পিত উন্নয়নের কাছে নদী তার চিরচেনা রূপ হারাতে বসেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের আন্তঃনদী মোট ৫৭টি। এর মধ্যে ৫৪টি নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছে। টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে এ অবস্থায় প্রধান করণীয় হচ্ছে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার মতো নতুন কৌশল উদ্ভাবন এবং তা প্রয়োগ করা।
মানুষের দুর্ভোগ কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া লবণাক্ত পানির প্রকোপ থেকে ফসলি জমি যতটুকু পারা যায় রক্ষা করা। খরা, নদীভাঙন ইত্যাদি দুর্যোগে মানুষ যাতে বাস্তুচ্যুত না হয়, এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া ও একই সঙ্গে জরুরি জলবায়ু সহনশীল কৃষি পদ্ধতি উদ্ভাবন করা। প্রতিটি জেলায় নদী রক্ষা কমিটি রয়েছে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে। নদী ভরাট ও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি নদী খননের প্রশাসনিক কার্যাদি সম্পাদন ও নদী রক্ষায় নানা সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিমূলক কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করাও দরকার। কিন্তু শুধু জেলা প্রশাসন অথবা পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী বাঁচাতে পারবে না। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি সরকারকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পগুলোর কাজের গতি ত্বরান্বিত করতে হবে। সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীল সবার জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করতে হবে।

হীরেন পণ্ডিত, রিসার্চ ফেলো, বিএনএনআরসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *