ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতকে পাশে পাচ্ছেন পুতিন

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ভারতের গোয়ায় শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজ়েশনের (এসসিও) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের ফাঁকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে সাইড টেবিল বৈঠক করেছেন।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, তাদের গত বৃহস্পতিবারের (৪ মে) বৈঠকে উঠে এসেছে ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার প্রসঙ্গ। আলোচনার সময় ভারতকে সবিস্তারে ড্রোন হামলার প্রত্যাঘাতের বিষয়টিও জানিয়েছেন লাভরভ।
একই সূত্রের খবর, ক্রেমলিনে হামলার নিন্দা করেছেন জয়শঙ্কর। ইউক্রেন তাদের বিরুদ্ধে হামলা করার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেও রাশিয়া তা বিশ্বাস করেনি। শুক্রবার (৫ মে) জয়শঙ্কর-লাভরভ আলোচনায় রাশিয়ার বক্তব্য খণ্ডন করতে চায়নি ভারত।
লাভরভ ভারতীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, মস্কোর পক্ষ থেকে ওই ড্রোন হামলার দৃষ্টান্তমূলক জবাব দেওয়া চলতে থাকবে।
যদিও বৈঠকের পরে এই দুজনের কেউই সরকারিভাবে মুখ খোলেননি।
তবে বৈঠক প্রসঙ্গে জয়শঙ্করের টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সামগ্রিক পর্যালোচনা হয়েছে। এসসিও গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রের সভাপতিত্বকরছে ভারত। এ ব্যাপারে রাশিয়ার সমর্থনে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করেছি। এছাড়া জি-২০ এবং ব্রিকস নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
পরে রাশিয়ার পক্ষ থেকে একটি বিবৃতির মাধ্যমে প্রচ্ছন্নভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যে, ইউক্রনের সঙ্গে যুদ্ধে এই মুহুর্তে নয়াদিল্লিকে পাশে পাচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সের্গেই লাভরভের সঙ্গে জয়শঙ্করের বৈঠকে আসন্ন বৈঠকসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়গুলো নিয়ে আস্থাপূর্ণ মতবিনিময় হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ক্ষেত্রে সমসাময়িক বিষয়গুলোও আলোচনায় উঠেছে। আমাদের দেশের মধ্যে বিশেষ কৌশলগত সম্পর্কের প্রধান দিকগুলোতে যেভাবে সহযোগিতা সর্বদা চালু রয়েছে তার প্রশংসা করেছেন মন্ত্রীরা।’

রাশিয়া ভারতীয় টাকায় দাম নিতে চায় না। কারণ, তার বিনিময় মূল্যের ওঠাপড়া প্রবল। আবার ভারতও রুবলে বাণিজ্য করতে ইচ্ছুক নয় কিছু সঙ্গত কারণে।
ভারত এই প্রস্তাবও মস্কোকে দিয়েছে যে, অস্ত্রের বিনিময়ে পাওয়া টাকা এখানকার বাজারেই বিনিয়োগ করতে। কিন্তু, সে ব্যাপারেও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আলোচনায় উঠে এসেছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের দিকটিও। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত অগ্রাহ্য করেই মস্কো থেকে বিপুল পরিমাণ অশোধিত তেল সস্তায় আমদানি করেছে ভারত।
কিন্তু একই সঙ্গে নয়াদিল্লি মস্কোর কাছে দাবি জানাচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যে ভারসাম্যের অভাব রয়েছে (অর্থাৎ রাশিয়া থেকে ভারতের আমদানি অনেক বেশি রফতানির তুলনায়), তা কমাতে হবে।
পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং অস্ত্র বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলার সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে লেনদেন করা যে সমস্যার তা টের পাচ্ছে দুই দেশই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *