দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই যুব সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হবে


হীরেন পণ্ডিত: যুগোপযোগী দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমেই যুব সমাজের কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। এই দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই যুব সমাজের সমৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে। তাই দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে যুব সমাজের সচেতনতা সৃষ্টি করা, আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করা ও কর্মসংস্থানের পথ নির্দেশনা প্রদান করার ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা করতে পারে। দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মহীন যুব সমাজকে জনশক্তিতে রূপান্তর ও তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এ দিবসের চেতনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুবদের বিভিন্ন পেশায় প্রশিক্ষণ অর্জন এবং তাদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রার পথ নির্দেশকসমূহ হচ্ছে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং এরই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ চলছে।

প্রযুক্তির ক্রমাগত বিবর্তনের নিরিখে দক্ষতার মান উন্নয়ন, অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারে দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগীকরণ, অভিন্ন সনদায়ন ব্যবস্থা প্রবর্তন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন ইত্যাদি বিষয় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ)-এর ওপর ন্যস্ত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি দক্ষতা উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলোকে সামনে রেখে সরকারি-বেসরকারি সকল অংশীজনের সহযোগিতা নিয়ে সময়োপযোগী একটি দক্ষতা উন্নয়ন ইকো-সিস্টেম তৈরি ও বাস্তবায়ন করার অন্যতম লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে যুবদের দক্ষ করে গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বহুমুখী শ্রমের চাহিদাপূরণ, প্রযুক্তির পরিবর্তনে কর্ম-সংকোচনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের পুনঃপ্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মপোযোগী করা, পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক বাজারে অধিকসংখ্যক দক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
বর্তমান সরকার যেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছে, তার মধ্যে শীর্ষে আছে তথ্য-প্রযুক্তি। এ খাতে দেশ যথেষ্ট এগিয়েও আছে। শহরের সীমা ছাড়িয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তির মোবাইল, ইন্টারনেট গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির নানা সুফল ক্রমেই মানুষের কাছে সহজলভ্য হচ্ছে। এখন পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে যোগাযোগ করা সহজ হয়েছে। গত ১৫ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশের পথচলা আমাদেরকে আরো আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও তৈরি করেছে। দেশের তরুণরা এখন কেবল স্বপ্ন দেখে না, স্বপ্ন বাস্তবায়নও করতে জানে।
তবে আমাদের দেশে দক্ষ প্রোগ্রামারের অনেক অভাব রয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে প্রযুক্তিখাতসহ সবক্ষেত্রেই খুব দ্রæত পরিবর্তন হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি আরো নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছে। বিভিন্ন প্রযুক্তির সংমিশ্রণ অর্থনীতি, সমাজ, ব্যবসা এবং ব্যক্তিগত জীবনে পরিবর্তন আনছে। যন্ত্রগুলি একে অপরের সাথে কথা বলছে, পরিস্থিতি কী তা জানছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে আরও দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। যারা বিদেশে যান তাদের কারিগরি বিষয়ে পারদর্শী হতে হয়। আর এ কারণেই কারিগরি শিক্ষার গুরুত্বের সঙ্গে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। সরকার যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তাদের সহায়তা করছে। দেশ গড়ার জন্য দক্ষ জনশক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটাই আমরা সব সময় ভাবি এবং আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কাজ করছি। সরকার এমনভাবে জনশক্তি তৈরি করছে যাতে তারা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের যেকোনো জায়গায় প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে পারে এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারে।
বিশ্বে এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ব্যাপক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। প্রথম শিল্প বিপ্লব শুরু হয় রেল রাস্তা, বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার ও উৎপাদনে যন্ত্রের ব্যবহার এ বিপ্লবের বৈশিষ্ট্য ছিলো। দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লব শুরু হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন দিয়ে। তৃতীয় শিল্প বিপ্লব যাকে কম্পিউটার বা ডিজিটাল বিপ্লবও বলা যায়। ক্ষুদ্র ও শক্তিশালী সেন্সর, মোবাইল ইন্টারনেট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং চতুর্থ বিপ্লবের মূল শক্তি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গুণগত পার্থক্য আছে, এ বিপ্লবে মেশিনকে বুদ্ধিমান করা হয়েছে। অন্য বিপ্লবে যন্ত্রকে ব্যবহার করেছে মানুষ আর এ বিপ্লবে যন্ত্র নিজেই নিজেকে চালানোর সক্ষমতা অর্জন করছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে যন্ত্রকে বুদ্ধিমান করা হচ্ছে। মানুষের মস্তিষ্কের চেয়ে যন্ত্রের ধারণক্ষমতা অনেক বেশি এবং প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা অনেক দ্রæত। ইন্টারনেটের কারণে এর কার্যক্রমের আওতা অনেক বিস্তৃতি লাভ করেছে। বাংলাদেশে বসে একটি বুদ্ধিমান কম্পিউটার যে কোন দেশের একটা যন্ত্রকে আদেশ দিতে পারে, একটা ঘরের তাপমাত্রা মেপে আদেশ দিতে পারে তাপমাত্রা বাড়ানো বা কমানোর।
পোশাকে আজকাল যন্ত্রপাতিতে চিপস ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয় ফলে শরীরের স্বাস্থ্যবিষয়ক বার্তা পাওয়া যায়। মানুষও পোশাকে ঘষা দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য পাঠাতে বা পেতে পারে। কম্পিউটারের প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা বাড়ছে আর দাম কমছে। বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিতে সেন্সর বা চিপস ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এগুলো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে মানুষের কাছে বার্তা পাঠানো যায় এটা ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি।
উন্নত বিশ্বে আইওটি নিয়ে অনেক গবেষণা চলছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আপনার গাড়ি, বাসার এসি, ফ্রিজ নির্দিষ্ট সময়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যাবে, ঘরে পছন্দসই তাপমাত্রা ঠিক করছে। রোবট ফ্রিজ থেকে নাশতা মাইক্রোওভেনে গরম করে রাখতে পারবে। ফ্রিজ তার ভেতরে সংরক্ষিত খাদ্যসামগ্রী স্ক্যান করে, খাদ্যাভ্যাস বিবেচনা করে, অনলাইনে ই-কমার্সে অর্ডার প্রদান করতে পারবে। এমনকি পশুর শরীরে চিপস স্থাপন করা যাচ্ছে এতে গবাদিপশুর শারীরিক অবস্থা, রোগ, প্রজননকাল ইত্যাদি আগেভাগে জেনে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে।
আমাদের এজন্য কম্পিউটার প্রোগ্রামার, ডাটা অ্যানালিস্টসহ কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন লোকের চাহিদা বাড়ছে। আশার কথা হলো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ ও সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এবং এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), বøকচেইন ও রোবটিকস স্ট্র্যাটেজি দ্রæত প্রণয়নের উদ্যোগ নেন এবং খসড়া প্রণয়নের পর মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। যে ১০টি প্রযুক্তি আমাদের চারপাশের প্রায় সব কিছুতেই দ্রæত পরিবর্তন আনবে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে তুলে ধরার পর প্রধানমন্ত্রী চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গুরুত্ব অনুধাবন করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেন। এটুআই প্রোগ্রাম ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত যৌথ সমীক্ষায় ছয়টি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়। এগুলো হচ্ছে সনাতনী শিক্ষা পদ্ধতির রূপান্তর, অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্ভাবনী, গবেষণা ও উন্নয়ন বিকশিত করা, সরকারি নীতিমালা সহজ করা, প্রবাসী বাংলাদেশিদের দক্ষতা কাজে লাগানো এবং উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করা। এই সমীক্ষার আলোকে স্কুল পর্যায়ে উদ্ভাবনে সহযোগিতা, প্রোগ্রামের শেখানোসহ নানা উদ্যোগের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রায় এক বছর আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এলআইসিটি প্রকল্প ১০টি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপর দক্ষ মানুষ তৈরির প্রশিক্ষণ শুরু করে। এসব উদ্যোগ আমাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ঝুঁকিকে সম্ভাবনায় পরিণত করার জন্য আশাবাদী করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষ জনশক্তির জন্য কারিগরি শিক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেছেন। আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে কারিগরি শিক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাদের দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন। আর সে কারণেই আমরা কারিগরি শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বের জন্যই দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। যাঁরা বিদেশে যাবেন, তাঁদের কারিগরি বিষয়গুলোয় দক্ষ হয়ে যেতে হবে। আর সে জন্যই কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাতে পরিবর্তন করা হয়েছে। যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, সরকার তাদের সহায়তা করছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘একটি দেশ গঠনের জন্য দক্ষ জনশক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এটা আমরা সব সময় মনে করি এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জনশক্তিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চায়, যাতে তারা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের যেকোনো জায়গায় প্রতিযোগিতা করতে পারে।
কয়েক হাজার বছরে মানব সভ্যতা এগিয়েছে অনেক। উৎকর্ষতা, অপটিমাইজেশন এবং দক্ষতা হচ্ছে এই শতকের মূল মন্ত্র। সেটার প্রয়োজনে এসে যোগ দিয়েছে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’। মানুষের সহজাত বুদ্ধিমত্তার সাথে যান্ত্রিক বুদ্ধিমত্তার যোগসূত্র না থাকলে পরবর্তী শতকে যাওয়া দুস্কর। সবার জন্য যুতসই শিক্ষা, প্রযুক্তির সাথে মানবিক রাষ্ট্রের ধারণা, নতুন ড্রাগ ডিসকভারি, দুরারোগ্য রোগ থেকে মুক্তি, আরবান প্ল্যানিং, মাস ট্রানজিট সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট, ড্যাসবোর্ডের সাহায্যে জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা- ইত্যাদি ইত্যাদি ব্যাপারগুলো অনেকটাই যৌথ উদ্যোগ ডেটার সাহায্যে, এ মুহূর্তে। বিশেষ করে মানুষকে ‘এনাবল’ করতে তার স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছাতে। তার জীবদ্দশায়। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনায় এসব কিছুই করা সম্ভব অল্প সময়ে। সেখানে আমরা পড়ে আছি অনেক পেছনে। অন্য দেশগুলো থেকে।
‘অ্যাপভিত্তিক নানা ধরনের সেবাও খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দৈনন্দিন কাজ, উৎপাদন, বিক্রি, বিপণন এমন নানা স্তরে সময়, শ্রম ও ব্যয় কমানোর জন্য এখন অনেকেই প্রযুক্তিকে বেছে নিচ্ছেন। বড় কম্পানিগুলো ইআরপি (এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং) সফটওয়্যার ব্যবহার করছে। তবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তার (এসএমই) একটি বড় অংশই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করছে।
মহামারি মোকাবেলা থেকে নানা কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) নানামুখী ব্যবহার দেখছে বিশ্ব। ‘আগামী দিনে ব্যবসার ধারণা আমূল পাল্টে দেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর নানা প্ল্যাটফর্ম। আগামী দিনগুলোয় চিকিৎসাসেবায়, অফিস-আদালতে, শিল্প-কারখানায়, সংবাদ সংস্থা বা গণমাধ্যমে, ভাষান্তর প্রক্রিয়া, টেলিফোনসেবা, বৈজ্ঞানিক গবেষণায়, হোটেল-রেস্তোরাঁ এমনকি বিপণিবিতানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন যন্ত্র বা রোবটের ব্যাপক ব্যবহারের আভাস দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে আমাদের রিস্কিলিং এবং আপস্কিলিং করতে হবে। আর দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে যুব সমাজের সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করা ও কর্মসংস্থানের পথ নির্দেশনা প্রদান করার ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা করতে হবে। এত করে যুব সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানো সহজ হবে।
হীরেন পÐিত: প্রাবন্ধিক ও রিসার্চ ফেলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *