বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আরো গুরুত্ব দিতে হবে


হীরেন পণ্ডিত: শিক্ষার সাথে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তির একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষার ভাবনা ও শিক্ষা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর সামগ্রিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বা আদর্শের সাথে মিল রয়েছে। বঙ্গবন্ধু মনে করতেন যুবদের মনে মূল্যবোধের সৃষ্টি ও তাদের চরিত্র গঠনের ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। শিক্ষার ক্ষেত্রে মুক্তবুদ্ধির চর্চা এবং মৌলিক চিন্তার অবকাশ খুব কমই ছিল। সে অবস্থার দ্রæত অবসান করতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই দেশবাসীর জন্য বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও শোষণমুক্ত দেশের স্বপ্ন দেখেন।
বঙ্গবন্ধু শিক্ষাকে সবসময় সামাজিক রূপান্তরের হাতিয়াররূপে দেখেছেন। দীর্ঘদিনের শোষণ জর্জরিত সমাজে দ্রæত সামাজিক রূপান্তর ও অগ্রগতির জন্য শিক্ষাকে বিশেষ হাতিয়াররূপে প্রয়োগ করতে চেয়েছেন। প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক সমাজ সৃষ্টির স্বার্থে সকল নাগরিকের মধ্যে মেধা ও প্রবণতা অনুযায়ী শিক্ষা লাভের সুযোগ-সুবিধার সমতাবিধানের মাধ্যমে জাতীয় প্রতিভার সদ্ব্যবহার সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন। একটি প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনের প্রয়োজনীয় সকল প্রকার দক্ষতা সৃষ্টিরও চেষ্টা করেছেন। নানাবিধ কুসংস্কার, অজ্ঞতা, অনাচার ও দুর্নীতি অবসানের অনুকূল বিজ্ঞানমুখী, আদর্শবাদী ও সামাজিক উন্নয়নের মনোভঙ্গি গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন। সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাগত দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিনামূল্যে, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার বিধানসহ গণমুখী, অভিন্ন, প্রগতিশীল এবং বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করেছেন।
বর্তমান উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের এ যুগে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে পরিচিত বিশ্বের চেহারা। মানুষের হাতে হাতে ডিভাইস, যে কোনো তথ্য ইন্টারনেট থেকে দেখে নেওয়া যায় এখন। ২০২৩ সালে বিশ্বের ৮০০ কোটির মধ্যে ৬৮০ কোটি মানুষই স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। এ সংখ্যা বছরে ৪.২ শতাংশ হারে বাড়ছে। অথচ আমাদের শিক্ষার্থীরা দ্রæত বদলে যাওয়া এই বিশ্বের সঙ্গে কতটা তাল মেলাতে পারছে তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। আমাদের নিয়মিত শিক্ষাব্যবস্থা এই পরিবর্তিত বিশ্বের উপযোগী করে শিশুদের জন্য গড়ে তুলতে অনেক চ্যালেঞ্জই আমাদের নিতে হচ্ছে। একগুচ্ছ বই নিয়ে স্কুল ও পড়াশোনা করে শিক্ষাজীবন শেষ করে কতজন নিজের মেধা, যোগ্যতা আর চেষ্টার জোরে বিশ্বের কাছে নিজেকে মেলে ধরতে পারছে এই বিষয়টি সামনে আসছে। তাই আধুনিক বিশ্বের উপযোগী শিক্ষার্থী তৈরি করতে হলে আমাদেরকে বৈশ্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও সেই ভিত্তিতেই যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন আগামীর বিশ্বের উপযোগী জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা এবং তা কাজে লাগানোর মতো প্রয়োজনীয় উদ্ভাবনী মানসিকতা, সাহস ও ধৈর্য। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারার মতো যথেষ্ট সক্ষমতা অর্জন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এই বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তারা বৈশ্বিক প্ল্যাটফরমে নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়।
আমাদের পাঠ্যপুস্তকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিফলনের বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির কথা এসেছিল। কিন্তু আজও বৈষম্য-বঞ্চনাহীন, যুক্তিভিত্তিক একটি সমাজ আমরা গঠন করার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কখনো এক পা এগিয়ে যাই আবার কখনো তিন পা পেছনের দিকে চলে যাই। এ যেন তৈলাক্ত বাঁশে উঠার মত মতো পিচ্ছিল একটা পরিস্থিতি। আমাদের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য-বঞ্চনার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সচেতন করে তুলতে পারছেনা। সংবিধানে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকার পরও সব নাগরিকের সমান অধিকার বিষয়েও স্পষ্টতা দেয় না। বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার মানসিকতা তৈরি করে না। বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থা মানুষকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে তৈরি করতে ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে এবং বিকশিত মানুষ সৃষ্টিতে কতটুকু ভ‚মিকা রাখতে পারছে সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ড. কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করাও বঙ্গবন্ধুর আধুনিক রাষ্ট্র গঠন উপযোগী নাগরিক তৈরির আগ্রহকে স্পষ্ট করে দিয়েছিলো। আমরা এখনও বিকশিত মানুষ তৈরি করার মতো একটি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারিনি।
আমাদের প্রচলিত শিক্ষায় অনেক ধারা রয়েছে, তার মধ্যে মোটা দাগে তিনটি ধারা প্রধান। শিক্ষার্থীদের অগ্রসর ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের দেশে এমনিতেই শ্রেণিবৈষম্য প্রকট। প্রধানত তিন ধারার শিক্ষা বিদ্যমান বৈষম্যকে আরও প্রকটতর করে তুলছে। আমরা যখন জাতীয় পাঠক্রম থেকে অনেক প্রয়োজনীয় ও শিক্ষণীয় বিষয় বাদ দিচ্ছি, তখন ইংরেজি মাধ্যমে যারা পড়ছে তারা ঠিকই এসব বিষয়ে শিখছে ও চিন্তাচেতনায় এগিয়ে থাকছে।
আমাদের দরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অনুকূলে বৈষম্যমুক্ত একটা অগ্রসর সমাজ। এ জন্য চাই যুক্তিনিষ্ঠ, বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তাচেতনার মানুষ তৈরির উপযোগী শিক্ষা, বঙ্গবন্ধু যাকে বলতেন বিকশিত মানুষ তৈরির শিক্ষা। জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, জন্মস্থান, অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে মানুষে মানুষে বৈষম্য কমিয়ে একটি সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে আগামীর পৃথিবীতে টিকে থাকার উপযোগী একটি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলায় মনোযোগ ও সম্পদ বিনিয়োগকে এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই বিবেচনা করতে হবে।
প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান শিক্ষা আর গবেষণায় আমরা আসলে কোথায় আছি? বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সব কটি বিশ্ববিদ্যালয়েই খোলা হচ্ছে বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়গুলো। দুঃখজনক হলেও সত্য, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় মানের চেয়ে সংখ্যাই এখন প্রাধান্য পাচ্ছে। বাংলাদেশে বসেই বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে হবে। আমরা চাই একজন শিক্ষার্থী এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়েই অনার্স, মাস্টার্স, পিএইচডি করে এই দেশে বসেই দেশের সেবায় নিবেদিত হোক। আমাদের সমস্যা আমাদের বিজ্ঞানীদেরই সমাধান করুক। আমাদের দেশে স্কুল পর্যায়ে অনেক বিজ্ঞানশিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে নিয়মিত, এর অন্যতম কারণ হলো আমরা বিজ্ঞানশিক্ষাকে স্কুল পর্যায়ে আকর্ষণীয় করতে ব্যর্থ হয়েছি। পেশা হিসেবে বিজ্ঞানী বা গবেষককে এখনো আকর্ষণীয় ও মর্যাদার একটি জায়গায় স্থান দেয়া সম্ভব হয়নি। বিজ্ঞানকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আবিষ্কার আর উদ্ভাবনের বিষয়গুলো গণমাধ্যমে উঠে আসা। একটি প্রগতিশীল, আধুনিক, গণমুখী, অভিন্ন এবং বৈজ্ঞানিক শিক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের বিষয়ে আমাদের আরো কাজ করতে হবে।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অবাধ জ্ঞান ও গবেষণায় আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। উচ্চ শিক্ষার অঙ্গনে একটি মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা যাতে গবেষণা, অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ এবং বিশ্লেষণাত্মক বিতর্কের মাধ্যমে সৃজনশীল চিন্তাভাবনা, জ্ঞানের জন্ম দেয়া যায়। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান, কারিগরী, প্রকৌশল, কলা ও গণিত শিক্ষার সম্প্রসারণ করা একান্ত প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা। আইসিটি শিক্ষা এবং আইসিটি অবকাঠামোর উন্নয়ন আরো অগ্রাধিকার দিতে হবে।
নৈতিক শিক্ষা, জ্ঞান শুধু কর্মদক্ষতা ও কৌশল অর্জন নয়, শিক্ষার্থীর মনে মৌলিক ও নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করাই হোক শিক্ষার উদ্দেশ্য। কর্মে ও চিন্তায়, বাক্যে ও ব্যবহারে যেন একজন শিক্ষার্থী সদা সর্বদা সততার পথ অনুসরণ করে। চরিত্রবান, নির্লোভ ও পরোপকারী হয়ে ওঠে এবং সর্বপ্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত হয় সে বিষয়ে সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনাটাও জরুরি। আগামী দিনের সৃজনশীল, সুচিন্তার অধিকারী, সমস্যা সমাধানে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার উপায় হলো শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজানো, যাতে এ দক্ষতাগুলো শিক্ষার্থীর মধ্যে সঞ্চারিত হয় এবং কাজটি করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে। একই ধরনের পরিবর্তন হতে হবে উচ্চশিক্ষার স্তরে। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য টিচিং অ্যান্ড লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গ্র্যাজুয়েট তৈরির জন্য স্কিল বিষয়ে নিজেরা প্রশিক্ষিত হবেন। উচ্চশিক্ষার সর্বস্তরে শিল্পের সঙ্গে শিক্ষার্থীর সংযোগ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষানবিশি কার্যক্রম বাধ্যতামূলক করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি বাস্তব জীবনের কার্যক্রম সম্পর্ক হাতে-কলমে শিখতে পারেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান, কারিগরি ও প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশের যে ভিত্তি তৈরি করে গেছেন, সে পথ ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এক যুগের বেশি পথচলায় এখন এটা প্রমাণিত, শেখ হাসিনার এক উন্নয়ন দর্শনের এখন লক্ষ্য ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার।
প্রানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত করার প্রধান হাতিয়ার হবে ডিজিটাল সংযোগ। তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মূল চাবিকাঠি হবে ডিজিটাল সংযোগ। স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজের জন্যে ডিজিটাল সংযোগ মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।’ দেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ পরিণত করার প্রধান হাতিয়ার হবে ডিজিটাল সংযোগ। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মূল চাবিকাঠি হবে ডিজিটাল সংযোগ। স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজের জন্যে ডিজিটাল সংযোগ মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। ডিজিটাল পণ্য বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন একটি বাস্তবতা। স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি গঠনই আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই।’
‘সরকারি বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট, ভার্চুয়াল বাস্তবতা, উদ্দীপিত বাস্তবতা, রোবোটিকস অ্যান্ড বিগ-ডাটা সমন্বিত ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে চায়। শিল্পাঞ্চলে ফাইভ-জি সেবা নিশ্চিত করা হবে। ডিজিটালাইজেশনে বাংলাদেশে বিপ্লব ঘটে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তরুণ প্রজন্ম এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন স্থাপন করেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন তথা ‘ গেøাবাল ভিলেজে’র অংশ থেকে ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকারও সেভাবেই গড়ে তুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুল থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানো হচ্ছে। শিক্ষাকার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির সম্মিলন কীভাবে ঘটানো যায়, তা ভেবে দেখতে হবে। আগামীর বাংলাদেশের জন্য যোগ্য ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে এই তরুণদের বা শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতে যা করণীয় সবই করতে হবে।
শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতেও প্রকৌশল শিক্ষার গুণগত মান ও দক্ষতা বাড়াতে হবে। নজর দিতে হবে ইংরেজি শিক্ষার প্রতিও। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণা ও উদ্ভাবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করতে হবে। জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। নানা অকল্যাণ পরিহার করে প্রযুক্তিবান্ধব বৈশি^ক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
লেখক: প্রবান্ধিক ও রিসার্চ ফেলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *