Togel Online

Situs Bandar

Situs Togel Terpercaya

Togel Online Hadiah 4D 10 Juta

Bandar Togel

বিশ্বের অবিসংবাদিত ও জননন্দিত এক নেতা বঙ্গবন্ধু



হীরেন পণ্ডিত: বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন, একে অপরের পরিপূরক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল নেতা বা নায়ক হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির শত বছরের ইতিহাসের গৌরবজনক ঘটনা হচ্ছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ। ৩০ লাখ শহীদের তাজা রক্ত, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং সীমাহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর এই স্বাধীনতার বিজয় অর্জিত হয়।

২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম এবং একাত্তরের নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেই বিজয় ছিনিয়ে এনেছে বীর বাঙালি। বাংলার অনেক সূর্য সন্তান হয়তো বাঙালি জাতির শৃঙ্খল মোচনের স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করেছেন বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের মহানায়ক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতি যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন শেখ মুজিবের নাম শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হবে। শেখ মুজিব শুধু একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামী চেতনা। শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও রাজনীতি একটি ভৌগোলিক সীমারেখায় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
১৭ মার্চ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। ১৯২০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়েরা খাতুনের চার মেয়ে এবং দুই ছেলের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। তার বাবা-মায়ের দেওয়া আদুরে নাম ছিল খোকা। তিনি কিশোর বয়সে খ্যাতিমান রাজনৈতিক নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছে গোপালগঞ্জে নির্ভীক কণ্ঠে তাদের গ্রামের স্কুলের দাবি তুলে ধরেছিলেন। আঠারো বছর বয়সে স্কুলে পড়ার সময় এক ঘটনায় প্রতিবাদী ভূমিকা গ্রহণের জন্য তরুণ শেখ মুজিব গ্রেপ্তার হন। সেসময় সপ্তাহখানেক জেলহাজতে থাকতে হয় তাকে। সেটা ছিল তার জীবনের প্রথম কারাবরণ। এরপর বাঙালি জাতির অধিকার, স্বাধীনতার জন্য অসংখ্যবার কারাবরণ করে এই মহান নেতা। রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে তার বাবা তাকে বাধা দেননি। অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে জানা যায়, তার বাবা তাকে বলেছিলেন, বাবা রাজনীতি করো আপত্তি করব না, পাকিস্তানের জন্য সংগ্রাম করছ এ তো সুখের কথা, তবে লেখাপড়া করতে ভুলিও না। লেখাপড়া না শিখলে মানুষ হতে পারবে না।

ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরপরই কিশোর মুজিব কলকাতায় যান। কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র থাকা অবস্থায় তার রাজনৈতিক জীবনের বড় পরিবর্তনগুলো শুরু হয়। তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় হন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিমের মতো নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হলে শেখ মুজিবও ঢাকায় চলে আসেন। নতুন রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। ১৯৪৯ সালে নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে গড়ে উঠা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমেই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক তৎপরতার সূচনা হয়। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ এর মহান ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৬৬ এর ঐতিহাসিক ছয় দফাভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুর ৬ দফার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তার ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেন। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী পরিকল্পিত গণহত্যা শুরু করলে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের আপামর জনগণ প্রায় নয় মাস যুদ্ধ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করে। জাতির পিতা পাকিস্তানের কারাগারে কাটানোর পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি আসে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখেন বঙ্গবন্ধু, ফিরে আসেন স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়। বিমানটি তেজগাঁও বিমানবন্দর স্পর্শ করে বিকাল ৩টায়। বিমানের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু জনতার মহাসমুদ্রের উদ্দেশে হাত নাড়েন। তার চোখে তখন স্বজন হারানোর বেদনা-ভারাক্রান্ত অশ্রুর নদী, আর জ্যোতির্ময় দ্যুতি ছড়ানো মুখাবয়ব জুড়ে বিজয়ী বীরের পরিতৃপ্তির হাসি। বিমানের সিঁড়ি বেয়ে জাতির জনক তার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পদার্পণের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনি করে রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতি সম্মান জানানো হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুকে মঞ্চের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

এয়ারপোর্ট থেকে রেসকোর্স ময়দানে গিয়ে সেখানে স্থাপিত মঞ্চে প্রায় কুড়ি মিনিটের সেই আবেগঘন বক্তৃতায় তিনি বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানে বন্দিদশায় তিনি ফাঁসিকাষ্ঠে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন, বাঙালিকে কেউ ‘দাবায়ে রাখতে’ পারবে না। ‘যে মাটিকে আমি এত ভালোবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালোবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালোবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারব কি না। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।’

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশে নগর ও গ্রামের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশে কৃষিবিপ্লব, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতায়ন, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল পরিবর্তন সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে শুধু অঙ্গীকারই করেন। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদে তা অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তিনি স্থায়ী ও দৃঢ় প্রত্যয়নে অঙ্গীকার করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান, অর্থাৎ আমাদের এই দেশ অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ। তিনি তার মেধা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। তিনি দেখলেন সব সুযোগ-সুবিধা শহরকেন্দ্রিক। তিনি বাংলাদেশের গ্রামগুলোকে আধুনিক ও পরিকল্পিত গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখলেন। কাউকে পেছনে ফেলে না রেখে এগিয়ে যাওয়া এই নীতি ও আদর্শকে সামনে রেখে প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

বাংলার জনগণ বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৩৫টি নির্দেশনাকে যুদ্ধ চলাকালীন অবশ্য করণীয় কর্তব্য হিসেবে পালন করে। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে প্রশাসন, শিক্ষা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, বন্দর কার্যক্রম, বৈদেশিক বাণিজ্য, যোগাযোগ, কৃষি, সেবা, অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্প-কারখানা নির্মাণ, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংক ও ট্রেজারি চালান, কর আদায়, বিমা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরকালীন ভাতা প্রদান, সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভাতা প্রদান ইত্যাদি।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ভাষণে বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে উন্নীত করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর তালিকা তৈরি করেন। তিনি সবার আগে অবকাঠামো উন্নয়নের দিকে নজর দেন। কারণ সেসময় দেশব্যাপী জনগণকে সহায়তা প্রদান ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনঃনির্মাণ খুবই জরুরি ছিল।

জাতির জনক একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে আপসহীন ছিলেন। তিনি বলেন, আমি আমার অফিসারদের হুঁশিয়ার করছি কেউ যেন ঘুষ না নেয়। এই মাটিতে দুর্নীতিকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। তার ভাষণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ছিল সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা। তিনি জনগণকে শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘তোমাদের অবশ্যই শান্তি বজায় রাখতে হবে। শান্তিপ্রিয় বাঙালি স্বাধীনতার জন্য অনেক রক্ত ঝরিয়েছে। তারা শান্তি রক্ষা করতেও জানে’। বক্তৃতায় তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বললেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই যে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হবে’।

সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির ব্যাপারেও জাতির জনক সজাগ ছিলেন। তিনি তার ভাষণে বৈদেশিক নীতির মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা দেন। তিনি বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ জাতির জনক অন্তর্ভুক্তিমূলক আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণের দিক নির্দেশনা দেন যেখানে দল-মত নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে। তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হবে’।

সঠিক দিক নির্দেশনা ছাড়া জাতি পুনর্গঠন হলে স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ যদি পর্যাপ্ত খাদ্য না পায়, মা-বোনদের যদি কাপড় না জোটে এবং যুব সমাজ যদি কাজ না পায় তাহলে আমাদের এই স্বাধীনতা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’ সশ্রদ্ধ চিত্তে বঙ্গবন্ধু সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের যুবক যারা আছে তারা চাকরি না পায়। মুক্তিবাহিনী, ছাত্র সমাজ তোমাদের মোবারকবাদ জানাই তোমরা গেরিলা হয়েছ, তোমরা রক্ত দিয়েছ, রক্ত বৃথা যাবে না, রক্ত বৃথা যায় নাই।’

‘একটা কথা- আজ থেকে বাংলায় যেন আর চুরি-ডাকাতি না হয়। বাংলায় যেন আর লুটতরাজ না হয়। বাংলায় যারা অন্য লোক আছে অন্য দেশের লোক, পশ্চিম পাকিস্তানের লোক বাংলায় কথা বলে না, তাদের বলছি তোমরা বাঙালি হয়ে যাও। আর আমি আমার ভাইদের বলছি তাদের উপর হাত তুলো না, আমরা মানুষ, মানুষকে ভালোবাসি। তবে যারা দালালি করেছে, যারা আমার লোকদের ঘরে ঢুকে হত্যা করেছে, তাদের বিচার হবে এবং শাস্তি হবে’-উল্লেখ করে জাতির পিতা বলেন, ‘তাদের বাংলার স্বাধীন সরকারের হাতে ছেড়ে দেন, একজনকেও ক্ষমা করা হবে না। তবে আমি চাই স্বাধীন দেশে স্বাধীন আদালতে বিচার হয়ে এদের শাস্তি হবে। আমি দেখিয়ে দিতে চাই দুনিয়ার কাছে শান্তিপূর্ণ বাঙালি রক্ত দিতে জানে, শান্তিপূর্ণ বাঙালি শান্তি বজায় রাখতেও জানে।’

আজকের বাংলাদেশের যে সমৃদ্ধি, উন্নয়নের মহাসোপানে যে অভিযাত্রা তার সূচনা করেছিলেন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। এ দেশের মানুষের কথা তিনি ভাবতেন সব সময়। কীভাবে এ দেশের মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে, উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতে পারবে সেই সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন মাত্র কয়েক বছরেই।

তিনি বলেন, আমার দেশের প্রতি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণমুখী সমবায় আন্দোলনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। কেননা সমবায়ের পথ-সমাজতন্ত্রের পথ, গণতন্ত্রের পথ। সমবায়ের মাধ্যমে গরিব কৃষকরা যৌথভাবে উৎপাদন-যন্ত্রের মালিকানা লাভ করবে। অন্যদিকে অধিকতর উৎপাদন বৃদ্ধি ও সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যবস্থায় প্রতিটি ক্ষুদ্র চাষি গণতান্ত্রিক অংশ ও অধিকার পাবে। জোতদার ধনী চাষীর শোষণ থেকে তারা মুক্তি লাভ করবে সমবায়ের সংহত শক্তির দ্বারা। একইভাবে কৃষক, শ্রমিক, তাঁতী, জেলে, ক্ষদ্র ব্যবসায়ীরা যদি একজোট হয়ে পুঁজি এবং অন্যান্য উৎপাদনের মাধ্যমে একত্র করতে পারেন তবে আর মধ্যবর্তী ধনিক ব্যবসায়ী-শিল্পপতির গোষ্ঠী তাদের শ্রমের ফসলকে লুট করে খেতে পারবে না। সমবায়ের মাধ্যমে গ্রাম-বাংলায় গড়ে উঠবে ক্ষুদ্র শিল্প যার মালিক হবে সাধারণ কৃষক, শ্রমিক এবং ভূমিহীন নির্যাতনের শিকার দুঃখী মানুষ। সমাজতন্ত্র স্থাপনের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই সমস্ত বড় শিল্প, ব্যাংক, পাটকল, চিনিকল, সুতাকল ইত্যাদি জাতীয়করণ করেছি। জমির সর্বোচ্চ মালিকানার সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছি। আজ সমবায় পদ্ধতিতে গ্রামে গ্রামে, থানায়, বন্দরে গড়ে তুলতে হবে মেহনতি মানুষের যৌথ মালিকানা। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে পাবে ন্যায্যমূল্য, শ্রমিকরা পাবে শ্রমের ফল-ভোগের ন্যায্য অধিকার। কিন্তু এই লক্ষ্যে যদি আমাদের পৌঁছাতে হয় তবে অতীতের ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থাকে আমূল পরিবর্তন করে এক সত্যিকারের গণমুখী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অতীতের সমবায় ছিল শোষক-গোষ্ঠীর ক্রীড়নক। তাই সেখানে ছিল কোটারি স্বার্থের ব্যাপক ভূমিকা।

জেলে সমিতি, তাঁতী সমিতি, গ্রামীণ কৃষক সমিতি যেন সত্যিকারের জেলে, তাঁতী, কৃষকের সংস্থা হয়, মধ্যবর্তী ব্যবসায়ী বা ধনী কৃষক যেন আবার এই সমিতিগুলোকে দখল করে অতীত দুর্নীতির পুনরাবৃত্তি না করে। যদি আবার সেই কোটারি স্বার্থ সমবায়ের পবিত্রতা নষ্ট করে, তবে নিশ্চিতভাবে জেনে রাখুন যে আমরা সমস্ত পুরাতন ব্যবস্থা বাতিল করে দেব। আমার প্রিয় কৃষক, মজুর, জেলে, তাঁতী ভাইদের সাহায্যে এমন একটি নতুন ও সুষম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যা শোষণ ও প্রতিক্রিয়াশীল কোটারি স্বার্থকে চিরদিনের জন্য নস্যাৎ করে দেবে।

বাংলাদেশ আমার স্বপ্ন, ধ্যান, ধারণা ও আরাধনার ধন। আর সেই সোনার বাংলা ঘুমিয়ে আছে চির অবহেলিত গ্রামের আনাচে-কানাচে, চির উপেক্ষিত পল্লী গ্রামে, বিস্তীর্ণ জলাভূমির আশপাশে আর সুবিশাল অরণ্যের গভীরে। ভাইয়েরা আমার, আসুন সমবায়ের জাদুস্পর্শে সুপ্ত গ্রাম বাংলাকে জাগিয়ে তুলি। নব-সৃষ্টির উন্মাদনায় আর জীবনের জয়গানে তাকে মুখরিত করি।

জাতির জনকের দুটি স্বপ্ন ছিল- বাংলাদেশ স্বাধীন করা এবং দেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করা। আমাদের তিনি স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং তার দ্বিতীয় স্বপ্ন পূরণ করছেন তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে এবং বাংলাদেশ ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভ করেছে। বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। কিন্তু আজ আমরা বাঙালি হিসেবে অনেক বেশি গর্ববোধ করি। কারণ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একে একে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সফল করে চলেছেন।

হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

slot qris

slot bet 100 rupiah

slot spaceman

mahjong ways

spaceman slot

slot olympus slot deposit 10 ribu slot bet 100 rupiah scatter pink slot deposit pulsa slot gacor slot princess slot server thailand super gacor slot server thailand slot depo 10k slot777 online slot bet 100 rupiah deposit 25 bonus 25 slot joker123 situs slot gacor slot deposit qris slot joker123 mahjong scatter hitam

sicbo

roulette

pusathoki slot

orbit4d slot

pusatmenang slot

https://www.firstwokchinesefood.com/

orbit4d

https://www.mycolonialcafe.com/

https://www.chicagotattooremovalexpert.com/

fokuswin

slot bet 200

pusatmenang

pusatplay

https://partnersfoods.com/

https://www.tica2023.com/

https://dronesafeespana.com/

https://mrzrestaurants.com/

slot server luar