হীরেন পণ্ডিত: জন্মেছি নেত্রকোণা জেলার এক গ্রামে। প্রাইমারী শেষ করেছি পূর্বধলার শাহবাজপুর সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয় থেকে। এরপর মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেছি হিরণপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। লেখাপড়ায় অমনোযোগি, অল্পসময় পড়াশোনা করা, মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়ানো, পড়ার টেবিলে বসে কল্পনার রাজ্যে ঘুরে বেড়ানো, এসব কারণে বাবা মা ভাইবোনেরা বিজ্ঞান বিভাগের মত জটিল বিষয় আমার মাথায় ঢোকাতে কষ্ট হবে এবং ভবিষ্যত রসাতলে যাব এই আশংকা করে আমাকে ভর্তি করলেন মানবিক শাখায়।
বাবা-মাসহ ভাইবোনদের লক্ষ্য করেছি আমাকে পড়াশোনা করানোর জন্য তাঁরা ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা করেছেন। সবাই বাড়ি এসে আমি কি করেছি, পড়াশোনা ঠিকমত করেছি কিনা সারা দিনের কর্মসূচিতে কি কি বিষয় ছিলো তার একটা প্রতিবেদন মায়ের কাছ থেকে শোনে নিতেন। এটা একটা নিত্যদিনের ঘটনা। তবে স্কুল পালানোর কথা কোনোদিন চিন্তাও করতে পারিনি। তার বড় একটা কারণ ছিলো, আমি যে স্কুলে পড়তাম সেটার প্রাথমিক শাখায় আমার বড় ভাই প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন, যার ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও স্কুল পালানোর সুযোগ আমার জীবনে তৈরি হয়নি। তবে মাধ্যমিকের শেষের দিকে এসে রুহুল কুদ্দুস স্যার (নবাব স্যার) সিরাজ স্যার, প্রধান শিক্ষক শাহাবুদ্দিন স্যারসহ অন্যান্য স্যারদের চোখ রাঙানো এবং ভয়ে কিছুদিন পড়ার টেবিলে বসে ১৯৮৩ সালে কোনরকমভাবে মাধ্যমিক পাশ করে এবার বাড়ি থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে নেত্রকোণা সরকারী কলেজে ভর্তি হই।
সকলে আমার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর রেজাল্টের কারণে কিছুটা বিরক্ত ছিলেন এবং কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করলেন আমার ভবিষ্যত নিয়ে, এই ফলাফল নিয়ে আমি কি করবো। সবাই ভেবেছিলেন আমি ভালোভাবে পাশ করতে পারলে আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সবাই আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। কারণ একজন মানবিক শাখার ছাত্রের জন্য প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সবচেয়ে ভাগ্যের বিষয়, এটা সবাই বলতেন। এদিকে বাবার বয়স হয়েছে তিনি সংসারের দায়িত্ব বড়ভাইদের হাতে ছেড়ে দিলেন। তারপর সংসারের সাময়িক দুর্যোগে অর্থিক অবস্থা খারাপ হলো এর মধ্য দিয়েই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হলো ১৯৮৫ সালে, আশানুরূপ ফলাফল না হলেও আগের চেয়ে অর্থাৎ মাধ্যমিকের চেয়ে ফল ভালো হলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করলাম। তারপর ক্লাসমেট ও বাল্যবন্ধু দুলাল শেখকে সাথে নিয়ে প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। ফলাফলে দেখা গেলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যবিত্ত এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর রেজাল্ট হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা দু’জনে দর্শন বা রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়তে পারি। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনসহ যে কোনো বিভাগে পড়তে পারি। আমার বন্ধু দুলাল সিদ্ধান্ত নিল সে আইন বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে।
আমার যেহেতু শিক্ষক হবার একট সুপ্ত বাসনা ছিলো এবং যেহেতু আমার পরিবারের সবাই শিক্ষক ছিলেন, লোকে বলে আগের হাল যেদিকে যায় পেছনেরটা নাকি সেদিকেই যায়। ইচ্ছা ছিলো শিক্ষক হবো তাই দর্শন বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান কোনো ব্যাপার নয়। কারণ এই বিষয় দু’টো নেই এরকম স্কুল কলেজের সংখ্যা নেই বললেই চলে। আমি প্রথমে দর্শন এবং পরে তা পরিবর্তন করে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তি হই ১৯৮৫-৮৬ সেশনে, জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে।
![](https://www.hirenpandit.com/wp-content/uploads/2024/03/ow8cot7tcmlyksayoewwuvmdo562tfce8damidku.png)
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা কিছু না বললেই নয় আমাদের পরীক্ষার সীট পড়েছিলো তখনকার কলাভবনে তখন চারতলা ছিলো আগের দিন সীট চেক করতে প্রায় ৪০ মিনিট ব্যয় হলো না চেনার কারণে। এই কলা ভবনটি এখন ৬তলা সেই সাথে বর্তমানে ডিজিটাল যুগে লিফট ও ইন্টারনেটসহ আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব সংযুক্ত হয়েছে, আমাদের সময়ে এগুলো ছিলোনা। আমাদের সময় এত জিপিএ ফাইভ বা গোল্ডেনের ছড়াছড়িও ছিলোনা। আমাদের এলাকার অনেক বড় ভাই পড়তেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয়ে, তাঁদের অনেকেই থাকতেন মাস্টারদা সূর্যসেন হলে। শরীফ উদ্দিন আহমেদ (শরীফ ভাই, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ) আইন বিষয়ে পড়তেন তিনি আমাদের কয়েক বছরের সিনিয়র ছিলেন তার রুমে এসে উঠলাম পরীক্ষা দেয়ার জন্য।
অনার্স অধ্যয়নকালীন সময়ে তিন বছর সরকারী বৃত্তি পেয়েছিলাম এবং অনার্সেও পেয়েছিলাম যা সম্মানের ছিলো অনার্স ও মাস্টার্স অধ্যয়নকালীন সময়ে কোনো বেতন দিতে হয়নি। ১৯৮৬ সালের ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ক্লাস শুরু হয়েছিলো। আমার স্কুল কলেজের বন্ধুদের মধ্যে অনেকে ভালো সাবজেক্ট পড়ার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাড়ি জমায়। আমি নেত্রকোণা থেকে পাশ করার পর আমার আরো দুই বন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলো একজন বিজন তালুকদার দর্শনে আর একজন নির্মল কুমার দাস, আমার মত রাষ্ট্রবিজ্ঞানে, দু’জনের বাড়ি মোহনগঞ্জে।
![](https://www.hirenpandit.com/wp-content/uploads/2024/03/October_Smriti_Bhawan_Jagannath_HallUniversity_of_Dhaka.jpg)
বিজন কুমার তালুকদার শিক্ষকতা করে আর নির্মল কুমার দাস ছাত্রনেতা গোলাম ফারুক অভির সহযোগী হিসেবে ছাত্র রাজনীতি করতো একসময় বাংলাদেশ জাতীয়তবাদী ছাত্রদল করতো এবং ডাকসুর সদস্যও হয়েছিলো, পরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছিলো পরে আবার জাতীয় পার্টির রাজনীতি করতো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকের কথা কিছু না বললেই নয়। ভর্তির পর ক্লাসে যোগদানের পূর্বেই নেত্রকোণা থেকে ট্রেনে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম ১৮ জুলাই। ট্রেন ঢাকা এসে যখন পৌঁছায় সূর্য তখন অনেকটা পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। জগন্নাথ হলে এসে পৌঁছার পর ৩১৮ নাম্বার রুমে আমি প্রীতিশদার জন্য অপেক্ষা করলাম এবং এখান থেকেই জগন্নাথ হলে আমার যাত্রা শুরু। তখন এটিকে ইস্টহাউজ বা পূর্বভবন বলা হতো গত কয়েক বছর হলো জরাজীর্নতার কারণে ভবনটিকে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে এবং এখন বহুতল ভবন তৈরি করা হয়েছে।
আমার ভর্তির আগের বছর ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছিলো। এসেম্বলী ভবনের ছাদ ধ্বসে ৩৯ টি তরতাজা প্রাণ হারিয়ে গিয়েছিলো আমাদের মাঝ থেকে, যে বেদনা আমাদের বয়ে যেতে হবে চিরকাল। এই জগন্নাথ হল এদেশের প্রতিটি মুক্তি সংগ্রামে রেখেছে গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ হয়েছেন বিশিষ্ট দার্শনিক ড. জি সি দেব, ড. সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য, ড. অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্যসহ আরো অনেকে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতের নির্মম হত্যাযজ্ঞের নিরব সাক্ষী হয়ে আছে আমাদের এই জগন্নাথ হল।
আমাদের ভর্তির পর পরই শুরু হয় অক্টোবর স্মৃতিভবন নির্মাণের কাজ। দিন রাত শুধু কংক্রিট তৈরির মেশিনের শব্দ, ইট, বালু আর সিমেন্টের ছড়াছড়ি। পরে এই ভবনের ৪৪৮ নাম্বার কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকী দিনগুলো (১৯৯৫ সাল পর্যন্ত) এখানেই কাটিয়েছি। এরশাদ সাহেব তখন দুর্দণ্ড প্রতাপে তার সামরিক শাসন পরিচালনা করে যাচ্ছেন। ১৯৮৭ সাল প্রায় পুরো বছরটাকে এরশাদ ভ্যাকেশনে আমাদের কাটাতে হলো। ১৯৮৮ সালে এরশাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণা এদেশের মানুষকে দ্বিধাবিভক্ত করার আরেকটি প্রয়াস ছিলো যার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করলাম, কাজের কাজ কিছু হয়নি সংসদে রাষ্ট্রধর্ম বিল পাশ হলো, যার ফলাফল আমরা ভোগ করছি এবং এর দায়ভাগ বাংলাদেশকে বয়ে যেতে হবে আরো অনন্তকাল, কেননা আমরা যতই বলি, আমরা ১৯৭২ সালের সংবিধানে আমরা ফিরে যাব এটা অদূর ভবিষ্যতেও বাস্তবায়িত হবে কিনা এটাই একটা বিরাট প্রশ্ন।
প্রয়াত বিশিষ্ট পদার্থ বিজ্ঞানী ড. ললিত মোহন নাথ ছিলেন আমাদের প্রিয় জগন্নাথ হলের তখনকার প্রাধ্যক্ষ। পরে অবশ্য আরো কয়েকজনকে প্রাধ্যক্ষ হিসেবে পেয়েছি যেমন ড. পরেশ চন্দ্র মণ্ডল (প্রয়াত), ড. জগদীশ চন্দ্র শুক্লাদাশ প্রমুখ। ড. প্রদীপ স্যার, ড. রতন স্যার (প্রয়াত) ও ড. নিরঞ্জন স্যারসহ সব স্যারেরা আমাদেরকে খুব সহযোগিতা করতেন।
এরশাদের সামরিক শাসন আর অনির্দিষ্টকালের বন্ধ থাকা ছিলো একটি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। আমাদের জীবনের প্রায় ৮ বছর কেড়ে নিয়েছে ৪ বছরের দু’টি ডিগ্রী নিতে, অবশেষে ১৯৯৫ সালের কোন একদিন এক অজানার উদ্দেশ্যে জগন্নাথ হল ছেড়ে আসি। আমাদের সময়কার জগন্নাথ হলের বন্ধুুবান্ধবদের মাঝে এক অন্যরকম হৃদ্যতা ছিলো। আমি ছোটবেলা থেকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন একটি পরিবারে বড় হয়েছি, কিন্তু কেউ প্রত্যক্ষ রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। আমার কয়েকজন বন্ধু ছিলো রাজনৈতিক কর্মী এবং লেখালেখি নিয়ে থাকতো তাদের মধ্যে অসীম সমাদ্দার (সদ্য প্রয়াত) ও ড. তপন বাগচী (বর্তমানে বাংলা একাডেমীর ফকলোর বিভাগের পরিচালক), নিমাই মণ্ডলসহ আরো অনেকের নাম মনে পড়ে। নির্মল চ্যাটার্জী বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা আমার ভালো বন্ধু, সহপাঠী।
তাছাড়া অসীম কুমার উকিল, সাবেক এমপি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, পঙ্কজ দেবনাথ, এমপি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবকলীগ, সুভাষ সিংহ রায়, জগন্নাথ হলের তৎকালীন নির্বাচিত ভিপি, বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক, অনুপম রায় (১৯৮৮ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের প্যানেলে নির্বাচিত ভিপি) তাপস পাল সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবকলীগ আমাদের সিনিয়র ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী আমাদের এক বছরের জুনিয়র ছিলেন।
বিধুভূষণ রায় ছিলো আমাদের আরেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু যিনি জীবনের অনেক সময় ব্যয় করেছেন এদেশে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের জন্য। নিজেকে প্রায় উৎসর্গই করেছিলো সেজন্য, কিন্তু বর্তমানে বিআরডিবির কমকর্তা, কি করবে বেচারা এদেশ কি সমাজতন্ত্রকে বুকে ধরে রাখবে। যে দেশে আলোর বার্তার চেয়ে অন্ধকারের বার্তা ছড়িয়ে যায় নিমিষে, শিক্ষিত সমাজকেও অন্ধকারের দিকে ধাবিত হতে দেখা যায় প্রায়ই। সে দেশে সমাজতন্ত্র!
আমার অনেক রুমমেট ছিলো সবার সাথেই অন্যরকম হৃদ্যতা ছিলো। তবে দুইজন রুমমেট ছিলো, রুমমেট না আমি বলি দুই ছোট ভাই, মায়ের পেটের ভাইয়ের চেয়ে বেশি। একজন অরুণ কুমার সরকার, আইন পাশ করার করার পর এখন রংপুরের ডাক সাইটে উকিল, ঢাকা শহর তার তেমন পছন্দ নয়, তাই রংপুরকে ঘিরে তার সব স্বপ্ন। কোনো সমস্যায় পড়লেই তার দ্বারস্থ হই আইনী পরামর্শ এর প্রয়োজন হলে। ওকে আমি এখনো তুই বলে সম্বোধন করি। আর একজন গৌতম চন্দ্র পাল, আমাদের সেই ছোট ভাইটি আজ বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব)। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের সাহেবের পিএস হিসেবে কর্মরত। গৌতম সরকারের একজন দক্ষ, চৌকষ ও সৎ কর্মকর্তা হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে এ যেন আমাদের সবার গর্বের বিষয়। ওদের নিয়ে কত স্মৃতি বুকে জমা হয়ে আছে। তা ছাড়া প্রকাশ চক্রবর্তী আরেক রুমমেট এখন আমেরিকা প্রবাসী।
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস কেবল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস নয়, একটি শহরের মানুষের সমস্ত প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে উঠতে এবং ধীরে ধীরে সোজা হয়ে ওঠার ইতিহাস, আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ইতিহাস এবং রাজনৈতিক বিবর্তন এবং এই পিছিয়ে পড়া শহরের উত্থান। জাতীয় শিল্প, সাহিত্য এবং সংস্কৃতি বিকাশে ঢাবি’র সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এ দেশের ভাষা আন্দোলন থেকে বাংলাদেশের উত্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের গৌরবময় ভূমিকা ছিল অতুলনীয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৯২১ সালের ১ জুলাই, সীমিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম চ্যান্সেলর ছিলেন তৎকালীন প্রাদেশিক গভর্নর আলেকজান্ডার জর্জ রবার্ট বুয়ার। প্রথম উপাচার্য ছিলেন পি জে হার্টোগ। তিনি সতেরো বছর লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ছিলেন। পূর্ববাংলার জনগণের উচ্চ শিক্ষায় যে অগ্রগতি হয়েছিল তা বজায় রাখতে ঢাবির প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য ছিল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণেই পরবর্তীতে পূর্ববঙ্গের শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষার সুযোগ পেয়েছিলেন এবং এই আধুনিক শিক্ষার সহায়তায় তারা সরকারী চাকরিতে প্রবেশের সুযোগও পেয়েছিলেন। এটি কেবল অর্থনীতির উন্নতিই করেনি তবে একটি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীও তৈরি করেছিলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের চিত্তের ও আবেগের একটা গভীর সম্পর্ক। এ দেশের মুক্তবুদ্ধিচর্চার প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত রয়েছে বাঙালি জাতির বিকাশ ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাস। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন; বুকের তাজা রক্ত রাজপথে ঢেলে দিয়েছেন; অসীম সাহসিকতায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন স্বাধীনতার সংগ্রামে ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে; প্রিয় মাতৃভূমির রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে সকল বুদ্ধিবৃত্তিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁরা সদা-সর্বদা সক্রিয় রয়েছেন। তাই, দেশের সকল সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ঐতিহ্যের লালনকারী প্রধান প্রতিষ্ঠানরূপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আপন মহিমায় সমুজ্জ্বল। এখানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা ও স্বাতন্ত্র্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত একশ বছরে নিঃসন্দেহে বহু ভালো ভালো গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সৃজনশীল ও মননশীল কাজ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মশতবর্ষে জ্ঞানচর্চা, গবেষণা, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পরম্পরা আমাদের বহন করে নিয়ে যেতে হবে নতুন প্রজন্মকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান-প্রযুক্তির অগ্রগতির ধারায় ও যুগের চাহিদার নিরিখে আমাদের পড়ার বিষয়, পাঠ্যসূচি, পাঠদান, গবেষণা ও নব নব উদ্ভাবন নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্যে ‘বঙ্গবন্ধু ওভারসিজ স্কলারশিপ’ চালু হয়েছে। এই স্কলারশিপের আওতায় আমাদের তরুণ শিক্ষকরা বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পাচ্ছেন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান বাড়ছে এবং দেশের উন্নয়নে তা কাজে লাগবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন ও গবেষণায় আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে মুজিববর্ষ থেকে ‘বঙ্গবন্ধু স্কলারশিপ ফর ফরেন স্টুডেন্টস’-এর আওতায় দশজন বিদেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশার কথা, এই বিষয়ে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নিরন্তর তাগিদ রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন বিভাগ, ছাত্র ও শিক্ষক সংখ্যায় সবার উপরে। সে ক্ষেত্রে পড়াশোনায় আগ্রহের গতিশীলতা বৃদ্ধি করা একান্ত প্রয়োজন। আমরা আশা করবো, যোগাযোগ ব্যবস্থার এই চরম উৎকর্ষের যুগে নতুন নতুন জ্ঞান ও উদ্ভাবন নিয়ে, সৃজনশীল বিষয়াদি নিয়ে বুদ্ধিদৃপ্ত ছাত্র-শিক্ষকরা নিজেদের শাণিত করবেন। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করবেন।
ঢাবি সত্যিই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত চাহিদা পূরণ করে চলেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে জাতির সেবা করে চলেছে। ঢাবির ভর্তি পরীক্ষাগুলি দেশের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। ঢাবি প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সকলের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান ছিলো বিশ্বমানের। দ্বিতীয়ত, এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ঢাবির গৌরবময় অতীত নিয়ে কথা বলার সময় কেউ তা এড়াতে পারে না।
আমরা যখনই কোন আলোচনা সামনে আসে তখন আমরা সর্বদা অতীত সম্পর্কে কথা বলি। কেউ বলেন না কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় একবিংশ শতাব্দীর দাবিগুলির সাথে লড়াই করতে হবে। বর্তমান বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে, ঢাবির ছাত্র-ছাত্রীদের দেশ গঠনের ক্ষেত্রে কীভাবে প্রস্তুত করা উচিত? এই প্রতিষ্ঠান থেকে কতজন স্নাতক সফলভাবে কর্পোরেট বিশ্বে প্রবেশ করতে পারেন বা নতুন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অভিযোজন করবেন তা কেউ বলেন না।
কিছু বুদ্ধিজীবী সমালোচনা করেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে। তাঁদের দাবি, গণতন্ত্রের নামে ঢাবিকে ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁরা দাবি করেন যে গত ১০০ বছরে ঢাবির অনেক কিছু বদলেছে। ঢাবি একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্রের উৎস হওয়ার কথা ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কোনো একাডেমিক ডিসকোর্স নেই বলে মনে করেন।
তবে তাঁরা এটি স্বীকার করেন যে এই বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তান আমলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এখন কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পালন করতে পারছেনা কিংবা অন্য বিশ্বদ্যিালয় থেকে পিছিয়ে পড়ছে সেটা বের করার সময় এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মূলত একটি শিক্ষার জায়গা এবং তারপরে একটি গবেষণা কেন্দ্র। তাঁদের কথাও উড়িয়ে দেয়া যায় না এই বিষয় নিয়ে কর্তৃপক্ষের আরো মনোনিবেশ করা উচিত।
বেশ কিছু সমস্যারও মুখোমুখি হতে হয় প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, এর ফলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। তা ছাড়া গত এক দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো ধরনের সেশনজটের মুখোমুখি হতে হয়নি যা একসময় ৪-৫ বছরের কোর্স ৭-৮ বছর লাগত। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং বৈশ্বিক মানদণ্ডে আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাতে হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাইকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে, গবেষণাকাজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে হবে এবং এ খাতে বাজেট বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে স্বাভাবিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তা থেকে জোর দিয়েই বলা যায়, এই সমস্যাগুলোও খুব দ্রুতই এ বিশ্ববিদ্যালয় কাটিয়ে উঠবে এবং নিজের গৌরবকে করবে আরও সুসংহত হবে।
বিশ্বায়ন ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির শুভ ও অশুভ প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলার প্রত্যাশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চলেছে, এটা আমাদের আশাবাদী করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজের মেধাবী শিক্ষার্থীদের উদার, মানবিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলবে এটাই আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রত্যাশা।
জ্ঞান আহরণ ও বিতরণের গৌরবগাথা নিয়ে শতবর্ষ পাড়ি দিয়েছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বৈশ্বিক নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে টেকসই উন্নয়নে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগী বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার গুণগত মান ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং গবেষণার পরিধি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। যা আমাদের আশাবাদী করে।
আমাদের সময়ে কোর্স সিস্টেমে পড়াশোনা হতো অনার্সের মূল বিষয়ের পাশাপাশি ২টি সাবসিডিয়ারী বিষয়। বিষয় হিসেবে নিয়েছিলাম দর্শন এবং সাধারণ ইতিহাসকে। যেহতু দর্শনকে এক সময় অনার্সের মূল বিষয় হিসেবে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তাই দুধের সাধ ঘোলে মেটানো আর কি! আর ইতিহাস কেনো প্রাসঙ্গিকভাইে এই প্রশ্ন সামনে আসে, কারণ উচ্চমাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছিলাম ইতিহাসে। এই নাম্বার আমার সরকারী শিক্ষাবৃত্তি পাবার পথ প্রশস্ত করেছিলো এবং একটা শক্ত ভিতও তৈরী করেছিলো। তাই ইতিহাসকে ভালোবাসার একটা প্রতিদান দেয়ার সিদ্ধান্তের কারণে ইতিহাসকেই সাবসিডিয়ারির বিষয় হিসেবে মনোনীত করলাম। তাছাড়া গুণীজন বলেন, ইতিহাস ছাড়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান অর্থহীন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান ছাড়া ইতিহাস মূল্যহীন, কারণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কথাগুলোই ইতিহাসকে বুকে লিখে এবং ধরে রাখতে হয়।
তবে ইতিহাসকে নির্মমভাবে সব ঘটনার নিরব সাক্ষী হয়ে থাকতে হয়। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে যেমন ম্যাকিয়াভেলী, হবস, লক ও রুশোকে সহ্য করতে হয় তেমনি ইতহাসকে কে কিভাবে তার কাহিনী লিখেন তার ওপর নির্ভর করেই নিরবে চোখ বুঝে থাকতে হয়। তাই নিজের পড়ার বিষয়কে মূল্যহীন করতে কে চায়! তাই বেচারা ইতিহাস এবং দর্শনকে সামনে নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে জীবনসাথী করে এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলাম।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আমরা শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম অত্যন্ত গুণীজনদের। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক সরদার ফজলুর করিম, অধ্যাপক সৈয়দ মকসুদ আলী, অধ্যাপক নাজমা চৌধুরী, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক শামসুল হুদা হারুন, অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ ভূইয়া, অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আমিনুর রহমান, অধ্যাপক শরিফুল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন, অধ্যাপক ডালেম চন্দ্র বর্মণসহ আরো অনেককে। শিক্ষক হিসেবে যাঁদেরকে পেয়েছিলাম যাঁরা অত্যন্ত গুণী এবং অত্যন্ত পণ্ডিত ব্যক্তি। আমরা তাঁদের ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছি এখনও তাঁদের জ্ঞানগর্ভ আলোচনাগুলো কানে বাজে এবং চোখে ভেসে উঠে।
আমাকে যদি বলা হয়, তোমার জীবনের ফ্ল্যাশ ব্যাকে তুমি কাকে চাও, আমি প্রথমেই বলবো আমার জগন্নাথ হলের দিনগুলোকে আমায় ফিরিয়ে দাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেমন আমাকে ঋণী করেছে তেমনি জগন্নাথ হল আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে আমাকে চিরঋণী করে রেখেছে। জয়তু জগন্নাথ হল, জয়তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শতবর্ষ পেরিয়ে এগিয়ে চলছো সামনের দিকে।
হীরেন পণ্ডিত, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও রিসার্চ ফেলো